কক্সবাজার বাংলাদেশের সব থেকে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। এখানে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুময় সমুদ্র সৈকত। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২২ কি.মি। এই এলাকায় আছে বেশি কিছু সুন্দর সুন্দর স্পট। সবগুলো কভার করতে হলে বেশ কয়েকবার যেতে হবে। তবে ভালো একটি প্ল্যান আপনাকে স্বল্প সময়ে পুরা কক্সবাজার কভার করতে সাহায্য করবে। আসুন দেখে নেই তেমন একটি ভালো মানের কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান ।
কক্সবাজারের দর্শনীয়
কক্সবাজারেরে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, কলাতলী বিচ, লাবনী বিচ, ইনানি বিচ, মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি, সোনাদিয়া দ্বীপ, রামু, মহেশখালী দ্বীপ, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান
কক্সবাজারের সবগুলো স্পট কভার করতে হলে মোটামোটি ৩-৪ দিন সময় লেগে যাবে। তবে তিন রাত দুই দিনে মোটামোটি কক্সবাজারের সব কিছু ঘুরে আসা যায়। ৩ রাত ২ দিনের কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান (Coxs Bazar Tour Plan) মোটামোটি এই রকম:
প্রথম দিন:
রাতে ঢাকা থেকে বাস/ট্রেনে রওনা দিয়ে সকালে কক্সবাজার পৌঁছাবেন। হোটেলে চেকইন করে হালকা বিশ্রাম করে চলে যাবেন লাবনী বিচ। দুপুরে হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ খেয়ে নিবেন। লাঞ্চ শেষে সিএনজি/চাঁন্দের গাড়ি ভাড়া করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে চলে যাবেন ইনানি বিচ। ভুলেও অটো নিবেন না। তাহলে সময় কুলাবেনা।
যাবার পথে হিমছড়ি দেখে নিবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইনানি বিচে থেকে চলে আসবেন কক্সবাজার। রাতে যেতে পারেন কলাতলী বিচ। অথবা লাবনী বিচের আগে ঝাউবনের কাছে মাছ ভাজা খেতে পারেন। মাছ খেয়ে চলে যাবেন পাশেই বার্মিজ মার্কেটে (যদি প্রয়োজন থাকে)।
দ্বিতীয় দিন:
সকালে ঘুম থেকে উঠেই চলে যাবেন মহেশখালী দ্বীপ। মহেশখালী যাবার বিস্তারিত এখানে দেখে নিতে পারেন। সেখান ২-৩ ঘন্টা থেকে চলে আসবেন কক্সবাজার শহরে। সময় থাকলে আবার বিচে যেতে পারেন। অথবা ফিস একুরিয়াম দেখে আসতে পারেন। হোটেলে চেকআউট করে লাঞ্চ করে নিবেন। কিছু সময় বিশ্রাম করে বাসে উঠে পড়বেন। সব কিছু ঠিক থাকলে সকালেই চলে আসবেন ঢাকা।
কক্সবাজার কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কক্সবাজার (Cox’s Bazar) বিভিন্ন উপায়ে আসা যায়। ঢাকা থেকে গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, সোহাগ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন ইত্যাদি বাস প্রতিদিন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রত্যেক সীটের ভাড়া ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী ট্রেনে চট্রগ্রাম চলে আসতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা অথবা ধামপাড়া বাস্ট স্ট্যান্ড থেকে হানিফ, এস আলম অথবা ইউনিক পরিবহনের বাসে কক্সবাজার আসতে পারবেন। বাস ভেদে ভাড়া ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা নিবে।
এছাড়া আকাশ পথেও কক্সবাজার আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, ইউএস বাংলা এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। আবার আকাশপথে প্রথমে চট্রগ্রাম এসেও সেখান থেকে সড়ক পথে কক্সবাজার যেতে পারবেন। বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ভাড়া বিভিন্ন রকম। সাইটে দেখে নিতে পারেন।
কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান নিয়ে শেষ কথা
আশা করি এই কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান, আপনার পরবর্তী কক্সবাজার ভ্রমণ কে আরো সহজ এবং সুন্দর করবে।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।