সিলেট বিভাগের দর্শনীয় স্থান

টাঙ্গুয়ার হাওর

Loading

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ গাইড
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ গাইড
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ গাইড
napittochara-trail-3
টাঙ্গুয়ার হাওর
napittochara-trail-3
টাঙ্গুয়ার হাওর
napittochara-trail-3
টাঙ্গুয়ার হাওর
Shadow

টাঙ্গুয়ার হাওর (Tanguar Haor) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। নীল পানি, নীল আকাশ, পাহাড়, সবুজ প্রকৃতি সব মিলিয়ে এই হাওরের সৌন্দর্য অপরিসীম। স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এর পানি খবুই স্বচ্ছ, একদম তলা দেখা যায়।

হাওর কি

বাংলাদেশে সুবিশাল গামলা আকৃতির অগভীর জলাভূমিকে হাওর বলে। প্রতি বছর বর্ষা কালে এই হাওরগুলো প্লাবিত হয়ে ঢেউহীন সাগরে পরিণত হয়। বছরে ৭ মাস এগুলো পানিতে ডুবে থাকে। আবার শীত ও গ্রীষ্মে কালে পানি কমে গেলে হাওরের মধ্যে থাকা বিলগুলোর পাড় জেগে ওঠে। স্থানীয় মানুষেরা একে বলে কান্দা।

কান্দা দিয়ে ঘেরা বিলগুলোর ভেতর জমে থাকা পানিতে থাকে অনেক মাছ। শুকিয়ে যাওয়া জমিতে গজায় প্রচুর সবুজ ঘাস। যার ফলে এগুলো হয়ে উঠে গবাদি পশুর চারণভূমি। জেগে ওঠে হাওরের বুকে লুকিয়ে থাকা গ্রামগুলো। কৃষকরা ফলান রবিশস্য ও বোরো ধান। হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ সুন্দর।

টাঙ্গুয়ার হাওর কোথায় অবস্থিত

টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মেঘালয়ের পাহাড় থেকে ৩০ টিরও বেশি ঝর্ণা এসে মিলিত হয়েছে এই হাওরে। দুই উপজেলার ১৮টি মৌজার ৫১ টি জলমহাল নিয়ে এই হাওরের মোট আয়তন ৬,৯১২.২০ একর। তবে বর্ষাকালে এর আয়তন বেড়ে দাঁড়ায় ২০,০০০ একর।

টাঙ্গুয়ার হাওর কখন যাবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়ার সব থেকে ভালো সময় বর্ষাকাল। তবে বর্ষার আগে দিয়ে বা পর পর গেলে ভালো। মাঝ বর্ষায় অনেক সময় বন্যা হয়, পানি অনেক বেড়ে যায়, সব কিছু তলিয়ে যায়। তবে অন্য সময়ও টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়া যায়। তখন পানি কম থাকে। আর পাখি দেখতে গেলে শীত কালে যেতে হবে।

টাঙ্গুয়ার হাওর কিভাবে যাবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে। ঢাকার গাবতলী, পান্থপথ, আরামবাগ, ফকিরাপুল, সায়দাবাদ থেকে হানিফ, শ্যামলী, এনা, মামুন ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির এসি/নন এসি বাস সুনামগঞ্জ যায়। নন এসি বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। যেতে সময় নিবে প্রায় ৭ ঘন্টা। সরাসরি কাউন্টার থেকে অথবা অনলাইনে বাসের টিকেট কাটা যায়।

বর্ষাকালে এই ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা স্পীড বোট দিয়ে সরাসরি টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়া যায়। সময় নিবে, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ৫ ঘন্টা, স্পীড বোটে ২ ঘন্টা। হরচ হবে, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা, স্পীড বোডে ৭৫০০ থেকে ৮০০০ টাকা।

গ্রীষ্মকালে সাহেব বাড়ি খেয়া ঘাট পার হয়ে, অপর পার থেকে মোটর সাইকেল দিয়ে যেতে হবে শ্রীপুর বাজার বা ডাম্পের বাজার। সময় নিবে ২ ঘন্টা, ভাড়া ২০০ টাকা। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে যেতে হবে টাঙ্গুয়ার হাওর। ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

রাতে হাওরে থাকতে চাইলে নৌকা ভাড়া করার সময় আগেই বলে নিবেন। সে ক্ষেত্রে ভাড়া নিবে ৫০০০ টাকার মতো। একটু উন্নত মানের নৌকা, যেগুলোয় হাই কমোড সহ টয়লেট, ছাদে টেরপল ইত্যাদি সুবিধা আছে সেগুলোর ভাড়া নিবে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ছুটির দিনে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। খাবারের জন্য দরকারি জিনিসপত্র নৌকায় উঠার আগেই কিনে নিবেন।

টাঙ্গুয়ার হাওরে কোথায় থাকবেন

টাঙ্গুয়ার হাওরে এখন পর্যন্ত বেসরকারী ভাবে থাকার জন্য কোনো হোটেল না রিসোর্ট নাই। তবে সরকারী ব্যবস্থাপনায় এখান থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের রেস্ট হাউজ আছে। সেখানে থাকা যায়। এছাড়া নৌকায় থাকতে পারেন। সুনামগঞ্জ শহরে এসেও থাকতে পারেন। এখানে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে হোটেল পাওয়া যায়।

টাঙ্গুয়ার হাওরের কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান

টাঙ্গুয়ার হাওরের কাছাকাছি আছে আরো কিছু দর্শনীয় স্থান। প্ল্যান করে হাতে ১/২ দিন সময় নিয়ে গিয়ে এক সাথে সব গুলো দেখে আসতে পারেন।

4.5 2 ভোট
রেটিং

লেখক

Rashedul Alam; Rasadul Alam; founder of cybarlab.com; founder of trippainter.com; trippainter.com; cybarlab.com; Bangladeshi travel blogger; Bangladeshi blogger; Bangladeshi software engineer

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
2 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

2
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx