অষ্টগ্রাম হাওর (Astagram Haor) প্রকৃতির এক অপূর্ব সমারোহ। হাওর, নদী আর মিঠাপানির জলাভূমি এই তিনের সংমিশ্রণ এই হাওর। বিভিন্ন ঋতুতে এই হাওর অপরূপ সাজে সাজে। তাই এই হাওরকে বলে হয় হাওরের রানী। বর্ষাকালে এই রানী যেন তার যৌবন ফিরে পায়।
অষ্টগ্রাম হাওর কোথায় অবস্থিত
অষ্টগ্রাম হাওর বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওরের পাশেই এর অবস্থান। কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এর পুরোটা, নিকলী, তাড়াইল ও করিমগঞ্জের কিছু অংশ, নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ী, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের কিছু এলাকাজুড়ে এই হাওর বিস্তৃত।
অষ্টগ্রাম হাওর যাবার উপায়
অষ্টগ্রাম যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ার চর। ঢাকা থেকে বাস এবং ট্রেনে আসা যায় কুলিয়ার চর। সায়দাবাদ থেকে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা, যাতায়াত পরিবহনের বাসে করে আসা যায় কুলিয়ার চর। সায়দাবাদ থেকে এসি বাসও পাওয়া যায়। ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সময় নিবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা। কমলাপুর থেকে সকাল ৭:১৫ তে এগারসিন্দুর ট্রেন ছেড়ে আসে কিশোরগঞ্জ। এই ট্রেন দিয়ে এসে কুলিয়ার চর নামা যায়। ভাড়া ১৩০ থেকে ২৮০ টাকা। সময় নিবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা।
কুলিয়ার চর নেমে রিক্সা/অটো নিয়ে চলে যাবেন লঞ্চ ঘাট। এই ঘাট থেকে সকাল ৬ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত এক ঘন্টা পর পর লঞ্চ ছেড়ে যায় অষ্টগ্রাম। ভাড়া ১০০ টাকা। সময় নিবে ৩ ঘন্টা। এখন স্পীড বোটও পাওয়া যায়, ভাড়া ২০০ টাকা। আর গ্রূপে গেলে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া নিয়ে যেতে পারেন। ভাড়া নিবে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
শুকনো মৌসুমে বাজিতপুর থেকে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন। ঢাকা থেকে বাজিতপুরের বিআরটিসি এসি বাস পাওয়া যায়। আর কিশোরগঞ্জগামী বাসে আসলে কটিয়াদি নেমে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন বাজিতপুর। ট্রেনে আসলে ভাগলপুর নেমে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন বাজিতপুর। বাজিতপুর বাজার থেকে অটো/সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন দীঘির পার। এখান থেকে নদী পার হয়ে অপর পার যেতে হবে। ঘাট থেকেই অটো/মোটর সাইকেল নিয়ে চলে যাবেন অষ্টগ্রাম।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
অষ্টগ্রাম হাওর এর আশেপাশের আছে বেশি কিছু হাওড়। সবগুলোরই দেখার মতো এবং সৌন্দর্যে ভরপুর। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো:
সতর্কতা
হাওর অনেক বিশাল। অনেক জায়গায় বেশ গভীর। তাই সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না। সাথে লাইফ জ্যাকেট রাখুন। এক নৌকায় বেশি লোক উঠবেন না। নৌকায় বেশি লাফালাফি করবেন না। তাহলে নৌকা ডুবে যেতে পারে। নৌকা ভাড়া করার সময় দরদাম করে নিবেন। এবং অবশ্যই উপরে ছামনি আছে তেমন নৌকা নিবেন। মোটর সাইকেল সাথে থাকলে সাবধানে চালাবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।