হাম হাম বা হামহাম জলপ্রপাত (Hum Hum Waterfall) প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট খুবই সুন্দর এক জলপ্রপাত। আর এর সৌন্দর্য বহুগুণে বেড়ে যায় বর্ষায়। সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি দুর্গম পথের রোমাঞ্চকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা দল বেঁধে ছুটে আসে এখানে।
হাম হাম জলপ্রপাত কোথায় অবস্থিত
হাম হাম জলপ্রপাত বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত। একদল পর্যটক ২০১০ সালের শেষের দিকে এই জলপ্রপাত আবিস্কারের করেছে বলে দাবি করা হয়।
তবে স্থানীয়দের দাবী, এই জলপ্রপাতের কথা তারা আগে থেকেই জানতেন। এর সঠিক উচ্চতা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে এর উচ্চতা ১৩৫-১৬০ ফুটের মধ্যে। যেখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের উচ্চতা ১৬২ ফুট।
হাম হাম জলপ্রপাত কখন যাবেন
হাম হাম জলপ্রপাতের আসল সৌন্দর্য বর্ষাকালেই সব থেকে ভালো দেখা যায়। তাই বর্ষাকালে যাওয়াই উত্তম।
হাম হাম জলপ্রপাত কিভাবে যাবেন
এই জলপ্রপাত যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে মৌলভীবাজার অথবা শ্রীমঙ্গল। ঢাকা থেকে বাস এবং ট্রেনে আসা যায় শ্রীমঙ্গল। সায়দাবাদ, ফকিরাপুল থেকে হানিফ, শ্যামলী, এনা ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানীর এসি/নন এসি বাস আসে শ্রীমঙ্গল। ভাড়া ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা। সময় নিবে ৪ ঘন্টা। এছাড়া সিলেটগামী ট্রেনে আসা যায় শ্রীমঙ্গল। সময় নিবে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘন্টা। ভাড়া ২২০ থেকে ১০০০ থাকা।
শ্রীমঙ্গল থেকে সকাল সকাল নাস্তা করে রওনা দিবেন হাম হাম। হোটেলের আশেপাশে প্রচুর সিএনজি পাওয়া যায়। হাম হাম যাবেন বলে একটা ভাড়া করে নিন। ভাড়া আপ ডাউন ১৫০০ টাকা নিবে। সিএনজি আপনাকে কলাবন পাড়া নামিয়ে দিবে। এখান থেকে সামনে আর গাড়ি নিয়ে যাবার রাস্তা নেই। তাই বাকি কয়েক কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা আপনাকে হেঁটে যেতে হবে। আর এই পথ পাড়ি দেওয়াই হাম হাম যাবার আসল মজা।
কলাবন পাড়া থেকে আপনাকে স্থানীয় একজন গাইড নিতে হবে। চা বাগানের শ্রমিকরাই এখানে গাইড হিসাবে কাজ করে। গাইড ভাড়া ২০০/৩০০ টাকা। এই গহীন বন এবং পাহাড়ী পথে আপনাকে প্রায় আড়াই ঘন্টা হাটা লাগবে। মাঝে মাঝে পাহাড়ে উঠা লাগবে, পানিতে নামতে হবে। তাই সাবধানে থাকবেন।
পানিতে জোঁক থাকে। সাথে লবন বা গুলি নিয়ে নিবেন। জোঁকে ধরলে এগুলো দিলে চলে যায়। আর সাথে অবশ্যই লাঠি নিয়ে নিবেন। লাঠি ভাড়া পাওয়া যায়। আসা যাওয়া ৫/৬ ঘন্টার মতো লাগে।
কোথায় থাকবেন
হাম হাম এ থাকার মতো কিছু নাই। তাই থাকতে চাইলে শ্রীমঙ্গল এসে থাকতে হবে। এখানে বিভিন্ন মানের হোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। বাজেট অনুসারে যে কোনো একটি ভাড়া করে নিন। তাদের মধ্যে হোটেল গ্রান্ড সুলতান, রেইন্ ফরেস্ট রিসোর্ট, টি-রিসোর্ট, টি টাউন রেস্ট হাউস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।