বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর (Bangladesh Air Force Museum) বাংলাদেশের প্রথম বিমান জাদুঘর। এখানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস ও সাফল্য সংরক্ষণ করা আছে। এখানে দর্শনার্থীরা বিমান বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্মারক, যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম দেখতে পারেন। নতুন প্রজন্মের কাছে বিমান বাহিনীর ঐতিহ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বিমান বাহিনী জাদুঘর কোথায় অবস্থিত
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর ঢাকা শহরের আগারগাঁওয়ে বেগম রোকেয়া সরণি সংলগ্ন আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন এর কাছে অবস্থিত। তেজগাঁও বিমানবন্দর রানওয়ের ঠিক পশ্চিম পাশে আইডিবি ভবনের সামনে এর অবস্থান।
বিমান বাহিনী জাদুঘর কিভাবে যাবেন
ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে বাস বা সিএনজি নিয়ে চলে আসুন আগারগাঁও। উত্তরা, রামপুরা, মতিঝিল, গুলিস্থান, ধানমন্ডি, সাভার, গাবতলী, মিরপুর থেকে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস আগারগাঁও রুটে চলাচল করে। বিমান বাহিনী জাদুঘর বা আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশন বললেই নামিয়ে দিবে। এছাড়া মতিঝিল, ফার্মগেট, উত্তরা থেকে মেট্রোরেল দিয়ে চলে আসুন আগারগাঁও স্টেশন।
প্রাইভেট কার বা উবার নিয়েও আসতে পারেন বিমান বাহিনী জাদুঘর। জাদুঘরের ভিতরে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে। নির্ধারিত ফী দিয়ে সহজেই গাড়ি পার্ক করা যায়।
বিমান বাহিনী জাদুঘরের সময়সূচী
বিমান বাহিনী যাদুঘর সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুক্রবার এবং শনিবার সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতি রোববার এই এই জাদুঘর বন্ধ থাকে। সন্ধ্যার পূর্বে কম পক্ষে ১ ঘন্টা আগে যাওয়া সব থেকে ভালো। দিনের আলোতে ছবি ভালো আসে।
বিমান বাহিনী জাদুঘরের টিকেটের মূল্য
বিমান বাহিনী জাদুঘরের এন্ট্রি ফী জন প্রতি ৫০ টাকা। ২ বছরের কম বাচ্চাদের টিকেট লাগেনা। ভিতরে ৩০ টাকার টিকেট কেটে হেলিকাপ্টার বা বিমানে উঠা যায়। মিনি চিড়িয়াখানার প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। এছাড়া ৩০ থেকে ১০০ টাকার টিকেট কেটে ভিন্ন রাইডে উঠা যায়। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য সব ধরণের টিকেটে ৫০% ছাড় রয়েছে। এর জন্য আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।
জাদুঘরের কি দেখবেন
বিমান বাহিনী জাদুঘরে বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার এবং সামরিক সরঞ্জাম রাখা আছে। টিকেট কেটে বিমান এবং হেলিকপ্টারে উঠে ছবি তোলা যায়। এছাড়া আছে স্কাই পার্ক, শেলফর্ড কিডস্ জোন, লেজার লাইট শো। ভিতরে মোটামোটি সাইজের একটি পুকুর আছে। যেখানে নৌকা দিয়ে ভ্রমণ করা যায়। বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য নানা ধরণের রাইডস আছে। স্ট্রাইকিংকার, ব্রেক ড্যান্স, রেঞ্জার রাইড, ট্রেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
জাদুঘরের ভিতরের পরিবেশ খুব সুন্দর। সবুজ ঘাসে ভরপুর। অনেক জায়গায় বসার ব্যবস্থা আছে। ইচ্ছে করলে ঘাসে বসে আড্ডা দিতে পারেন। বাচ্চাদের জন্য জায়গাটি খুবই আদর্শ। খোলামেলা পরিবেশে দৌড়াদৌড়ি করে ওরা অনেক মজা পাবে।
কোথায় খাবেন
জাদুঘরের ভিতরে রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে কাবাব, ফাস্টফুড, আইসক্রিম, সফ্ট ড্রিঙ্কস, পানি সহ নানা ধরণের খাবার পাওয়া যায়। দাম মোটামোটি হাতের নাগালেই। সাথে খাবার পানি নিয়ে যেতে পারেন। হাটাহাটি করে পানির পিপাসা পেয়ে যাবে।
সতর্কতা
- জাদুঘরটি সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। তাই ভিতরে অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকুন।
- নিরাপত্তায় নিয়োজিত লোকজনের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
- রাত ৮ টা বাজার সাথে সাথে এটি বন্ধ হয়ে যায়। তাই হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যাবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।