ভারত ভ্রমণ কাহিনী

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা । সিকিম ভ্রমণ – পর্ব: ৬

Loading

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
napittochara-trail-3
ছাঙ্গু লেকে আমি
napittochara-trail-3
ছাঙ্গু লেক
napittochara-trail-3
কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্ট
Shadow

ভারতের সর্বোচ্চ ও সুন্দর লেক গুলোর মধ্যে সাঙ্গু লেক (Changgu Lake) অন্যতম। এই লেক সিকিম রাজ্যের রাজধানী গ্যাংটক শহরের পূর্ব দিকে চায়না বর্ডারের কাছে অবস্থিত। উচ্চতা, ঠান্ডা, তুষারপাত এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এই লেক পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা (Changgu lake travel experience) শেয়ার করবো।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

সাঙ্গু ভুটিয়া ভাষার একটি শব্দ, যার অর্থ হ্রদের উৎস বা পানির উৎস। শীতকালের সাঙ্গু লেকের চারপাশের পাহাড় গুলোতে প্রচুর পরিমানে বরফ জমে। গ্রীষ্মকালে সেইসব বরফ গলা পানি হ্রদে এসে জমা হয়। যার কারণে লেক টির এমন নামকরণ করা হয়েছে। সাঙ্গু লেক সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৭৫৩ মিটার বা ১২,৩১৩ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।

ছাঙ্গু লেক যাবার জন্য অনুমতি নিতে হয়। যা গতকাল রাতেই আমি সানফ্লাওয়ার ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ৪,৫০০ রুপি ফি দিয়ে নিয়ে রেখেছিলাম। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে সবাই গোসল করে নিলাম। ছোট একটা বাগে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র রেখে বাকি সব কিছু লাগেজে ঢুকিয়ে দিলাম। ছাঙ্গু লেক থেকে ফিরে আমরা শিলিগুড়ি চলে যাবো। তাই হোটেল রিসিপশনে রুম ভাড়া পরিশোধ করে রুমের চাবি বুঝিয়ে দিলাম। সেখানে লাগেজ রেখে চলে গেলাম আপনা পছন্দ ধাবা রেস্টুরেন্টে।

নাস্তা করে ২০০ রুপি দিয়ে একটা ট্যাক্সি নিয়ে সকাল ১০ তার দিকে চলে গেলাম ভজরা ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। পৌঁছে ড্রাইভারকে ফোন দিতেই গাড়ি নিয়ে হাজির। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে ট্যাক্সি ছেড়ে দিলো। আজকের ড্রাইভার বেশ ইয়ং ম্যান এবং মিশুক। আমি সামনের সিটে বসে উনার সাথে বেশ আলাপ জুড়ে দিলাম।

গ্যাংটক শহরের একটু বাহিরে চেকপোস্টে এসে গাড়ি থামে। এখানে পার্মিশনের কপি দেখাতে হয়। কিন্তু এজেন্সি থেকে ঠিক করা গাইড অন্য গাড়ির সাথে আছে। উনার কাছে আমাদের পার্মিশনের কপি। তাই উনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। এই ফাঁকে আমি গাড়ি থেকে নেমে বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। জায়গাটি বেশ উপরে এবং খুবই সুন্দর। অবশেষে গাইড আসে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে করে আমরা চলা শুরু করলাম।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
পুলিশ চেকপোস্ট: মার্চ ১৫, ২০২৩ সকাল ১১:১০

গ্যাংটক নাথুলা হাইওয়ে ধরে পথ চলা

আমরা চলেছি গ্যাংটক নাথুলা হাইওয়ে ধরে। এটি প্রাচীন সিল্ক রোডের অংশ। প্রাচীনকালে একসময় তিব্বতের রাজধানী লাসা থেকে বাংলা অঞ্চলে পণ্য পরিবহনের জন্য এই সড়ক ব্যবহৃত হতো। এই সড়ক খুবই সুন্দর এবং বেশ প্রশস্ত। নর্থ সিকিমের সড়ক থেকে এর কন্ডিশন অনেক ভালো। আঁকাবাঁকা হলেও বেশ ভালো স্পিডে গাড়ি চালানো যায়। একপাশে উঁচু পাহাড়, অন্য পাশে খোলা উপত্যকা।

গ্যাংটক শহর থেকে সাঙ্গু লেকের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে ১ থেকে ২ ঘন্টা। তবে এই পথ সব সময় খোলা থাকে না। ভারী তুষারপাতের কারণে অনেক সময় বন্ধ থাকে। প্রায় সময় অনেক ট্যুরিস্ট আটকে পরে। তখন প্রশাসন থেকে এখানে আসার অনুমতি দেয়া হয় না। গতকালও নাকি বন্ধ ছিল। আজকের আবহাওয়া বেশ ভালো এবং রৌদ্রোজ্জ্বল। তবে এখানকার প্রকৃতি বদল হতে সময় লাগেনা। মুহূর্তের মধ্যেই সব কিছু অন্ধকার হয়ে যায়। আমি মনে মনে আল্লার কাছে দোয়া করছি, যাতে সব কিছু দেখে ভালো ভাবে গ্যাংটক ফিরে আসতে পারি।

সাঙ্গু লেক থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে ভারত-চায়না সীমান্ত। যেখানে আছে নাথুলা পাস, বাবা মন্দির। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তার কারণে সেখানে পৌঁছতে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক ছাড়া অন্য কারো সেখানে যাবার অনুমতি নেই।

গ্যাংটক নাথুলা হাইওয়ে
গ্যাংটক নাথুলা হাইওয়ে: মার্চ ১৫, ২০২৩ সকাল ১১:২৫

কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্ট

রাস্তার দুই পাশে একটু পর পর বাঁশের খুঁটির মধ্যে লম্বা লম্বা ফ্ল্যাগ সারিবদ্ধ ভাবে টানানো আছে। কৌতহলবশত ড্রাইভার কে জিজ্ঞেস করলাম, এই সব ফ্ল্যাগের মানে কি? উনি বললো এগুলো হলি ফ্ল্যাগ। বৌদ্ধ ধর্মের কেউ মারা গেলে উনার জন্য ১১৭টি ফ্ল্যাগ টানানো হয়। এটি এখানকার নিয়ম। উনার কাছ থেকে আমি আরো কিছু লোকাল কালচার সম্পর্কে জেনে নিলাম। আমি কোথাও ঘুরতে গেলে সেখানকার মানুষের কালচার এবং ধর্ম বিশ্বাস কে সম্মান করি। আমাদের সবারই এটি ফলো করা উচিৎ।

আমরা ক্রমাগত উপরের দিকে উঠতে থাকি। আস্তে আস্তে ঠান্ডা বাড়তে থাকে। মাঝে মধ্যে রাস্তার দুই পাশে বরফ জমে আছে। একপর্যায়ে আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্টে থামি। জায়গাটি অসাধারণ। এখানেও প্রচুর বরফ জমে আছে। মেয়েরা বরফে অনেক মজা করে। আমরা প্রচুর ছবি তুললাম। এখানে এক ইন্ডিয়ান কাপল কে পেলাম। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে খুশি হলো। উনারা আমাদের অনেক ছবি তুলে দিলো। আমরাও উনাদের ছবি তুলে দিলাম। উনারা যথেষ্ট ফিল্মি।

কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্ট
কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্টে আমি: মার্চ ১৫, ২০২৩ সকাল ১১:৪০

হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় গরম গরম মোমো

ছাঙ্গু লেকর একটু আগে এক রেস্টুরেন্টে ড্রাইভার গাড়ি থামালো। রেস্টুরেন্টের চারপাশ ৩/৪ ফুট বরফে ঢেকে আছে। টিনের চালে বরফ জমে আছে। সড়কের দুই পাশ দিয়ে বরফ গলা জল বয়ে চলেছে। আমরা সাবধানে পা ফেলে রেস্টুরেন্টের ভিতরে প্রবেশ করি। ভিতরে ২/৩ জন মহিলা বসে বসে আগুন পোহাচ্ছে। আমাদের দেখে উনারা খুব খুশি হলো। কারণ রেস্টুরেন্টে আমরা ছাড়া অন্য কোনো কাস্টমার নেই।

তীব্র ঠান্ডায় আমরা প্রায় জমে যাচ্ছিলাম। আমার ছোট মেয়ের বয়সী উনাদের এক মেয়ে বেবি দিব্বি ভিতরে খেলা করছে। খেলার ফাঁকে ফাঁকে একটু পর পর আমাদের সাথে এসে দুষ্টামি করছে। এখানে লোকাল খাবার পাওয়া যায়। আমরা চিকেন মোমো অর্ডার করি। ভীষণ ঠান্ডার মধ্যে ১২ হাজার ফুট উপরে বসে গরম গরম মোমো খাওয়া স্বর্গীয় সুখ। দেশে আমি অনেক মোমো খেয়েছি। কিন্তু এখানকার মোমোর টেস্ট খুবই অসাধারণ। একবার খেয়ে আমরা আবার অর্ডার করি। এখানে টয়লেটের ব্যবস্থা আছে।

এখানে জ্যাকেট, বরফে হাঁটার প্লাস্টিকের জুতা, গ্লাভস ইত্যাদি ভাড়া পাওয়া যায়। প্রতি জোড়া ১০০ রুপি দিয়ে আমি কেবল সবার জন্য জুতা ভাড়া নিলাম। আমরা আবার চলা শুরু করি। ২০০ মিটার আগাতেই চেক করে দেখি ছোট মেয়ের জুতা রেস্টুরেন্টে ফেলে এসেছি। সবাইকে গাড়িতে রেখে আমি দৌড়ে চলে গেলাম জুতা আনতে। নামার সময় খুব একটা টের না পেলেও উঠার সময় আমার অবস্থা কাহিল। ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় হাটা খুবই কষ্টকর। একটা গাড়ি সাহায্য নিয়ে অবশেষে আমি আমাদের গাড়ির কাছে পৌঁছাই।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
জ্যাকেট এবং মোমো: মার্চ ১৫, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৫

পাহাড়ে আবহাওয়া দ্রুত বদলায়

একটু পরেই আবহাওয়া হটাৎ খারাপ হয়ে যায়। রোদ্রৌজ্জ্বল আকাশ মুহূর্তের মধ্যে কালো হতে শুরু করলো। একটা মারাত্মক ঝড় আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। দূরের আকাশে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কয়েকটি গাড়িকে দেখলাম ঘুরিয়ে গ্যাংটক চলে যাচ্ছে। আমাদের ড্রাইবার বললো দাদা কি করবেন? গতকাল অনেকেই আটকা পড়েছিল। চলুন ফিরে যাই।

কয়েকশো মিটার সামনে সাদা সাদা পাহাড়ের উপরে ছাঙ্গু লেক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। এতো কাছে এসে ফিরে যেতে মন চাইলোনা। সিদ্ধান্ত নিলাম, আল্লাহ ভরসা। যা আছে কপালে। ছাঙ্গু লেক দেখেই গ্যাংটক ফিরবো। ড্রাইভারকে বললাম আপনি আগে বাড়ান। আমরা লেক দেখে যাবো।

ছাঙ্গু লেকের সৌন্দর্য উপভোগ

এখানে আজ অনেক ট্যুরিস্ট এসেছে। জ্যামের কারণে গাড়ি আর সামনে আগাতে পারছে না। ড্রাইভার কে বললাম আপনি এখানে থাকেন। আমরা হেটে চলে যাই। প্লাস্টিকের জুতা পরে ২/৩ ফুট বরফের মধ্য দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। সামনে এগোতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিলো। কয়েকবার তো পিচ্ছিল খেয়ে পরেও গেলাম। সে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা।

অবশেষে পৌঁছে যাই কাঙ্ক্ষিত সেই ছাঙ্গু লেক। ছাঙ্গু লেক আসলেই অসম্ভব সুন্দর। চারপাশ উঁচু উঁচু সাদা পর্বতে ঘেরা। অনেকটা ডিম্বাকৃতির প্রায় ৬০ একর আয়তনের এই লেক শীতকালে পুরো বরফে জমে যায়। আমরা শীতের প্রায় শেষ সময়ে এসেছি। তবুও জায়গায় জায়গায় পানি বরফ হয়ে আছে। মনে হচ্ছে বিশাল আকৃতির বরফের পাত্রের মধ্যে সামান্য কিছু পানি জমে আছে।

এখানে মারাত্মক ঠান্ডা। সেই সাথে তীব্র বাতাস বয়ে চলেছে। ইচ্ছে ছিল ইয়াকের পিঠে চড়ে সাঙ্গু লেকের চারদিকে ঘুরে বেড়াবো, ক্যাবল কারে উঠবো। কিন্তু মেয়েদের কারণে ২০০ রুপি দিয়ে ইয়াকের পিঠে চড়ে কেবল কিছু ছবি তুলে নিলাম। এখানে ক্যাবল কারে চড়ে আরো উপরের দিকে উঠা যায়। লেকসহ আশেপাশের বিস্তৃত এলাকার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

ঠান্ডার কারণে মেয়েদের কষ্ট হচ্ছিলো। তার উপর ঝড় টা খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। তাই আর দেরি না করে গাড়ির দিকে আগাতে থাকি। আমাদের গাড়ি রং লাল। তাই দূর থেকে সহজেই দেখতে পাচ্ছিলাম। গাড়িতে আসার সাথে সাথে ড্রাইভার বললো দাদা জলদি চলেন। ঝড় প্রায় চলে এসেছে।

এখানে আসলেই মারাত্মক ঠান্ডা। তার উপরে জুতা গুলো ভালো মানের ছিলোনা। ডাবল মোজা পরার পরেও পা জমে শক্ত হয়ে যাচ্ছিলো। পায়ে ব্যথা পাচ্ছিলাম। এতো ছোট বাচ্চা নিয়ে রিক্স একটু বেশি নিয়ে ফেলেছিলাম। সাথে অন্য কেউ থাকলকে অবশ্য ওদের গাড়িতে রেখে যেতাম। তবে ওদের শ্বাসকষ্ট হয় নাই। জাস্ট ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছিলো। গ্যাংটক থেকে আমি কর্পূর কিনে নিয়েছিলাম। শ্বাসকষ্ট হলে এটি ভালো কাজে দেয়।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
ছাঙ্গু লেকে মেয়েদের সাথে আমি: মার্চ ১৫, ২০২৩ দুপুর ১:৪০

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ শেষে বিচিত্র অভিজ্ঞতা

১৫/২০ মিনিটের মধ্যে দুপুর বেলা চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেলো। বৃষ্টি শুরু হলো। অন্ধকারের মধ্যেই লাইট জ্বালিয়ে আমরা এগিয়ে চললাম। প্রথমে হালকা তুষারপাত। এর পরে শুরু হলো ভারী তুষারপাত। কিছুই আর সামনে দেখা যাচ্ছে না। রাস্তায় কয়েক ফিট বরফ জমে গেছে। গাড়ি আর সামনে আগাতে পারছে না। ড্রাইভার স্টার্ট বন্ধ করে দিলো। আমাদের সামনে কোনো গাড়ি নেই। মনে নানা রকম ভয়, শংকা কাজ করছে।

বেশ কিছুক্ষন পর অন্ধকার কিছুটা গেটে গেলো। মনে একটু সাহস পেলাম। একটি গাড়ি আমাদের ওভারটেক করে কয়েক গজ এগিয়ে যেতেই স্লিপ কেটে এক পাশে পাহাড়ের সাথে লেগে গেলো। ড্রাইভার বললো এভাবে আগানো ঠিক না। আর্মিদের কোনো বড় গাড়ি গেলে রাস্তার বরফ বৃষ্টির পানিতে কিছুটা চলে যাবে। তখন আমরা যাবো।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
অন্ধকারাছন্ন আকাশ: মার্চ ১৫, ২০২৩ দুপুর ২:০৫

জোরে জোরে তুষার পড়ছে। ড্রাইভার ভয় পেলেও আমরা খুব ইনজয় করছি। একটু পর পর গ্লাস নামিয়ে বরফের ছবি তুলছি। আমাদের পিছনে আরো অনেক গুলো গাড়ি বসে আছে। ড্রাইভারকে দিয়ে বাহিরের বেশ কিছু ভিডিও করে নিলাম। প্রায় ১ ঘন্টা পর বৃষ্টির পানিতে বরফ কিছুটা চলে যায়। আমরা আবার চলা শুরু করি।

পুরো পথেই জায়গায় জায়গায় বরফ জমে ছিল। গ্যাংটক এসেও কিছু পেয়েছি। বেশ কিছু জায়গায় নির্মাণ শ্রমিকেরা বৃষ্টির মধ্যে পলিথিন মাথায় দিয়ে নির্জন রাস্তায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের অসহায়ত্ব দেখে বেশ খারাপ লাগলো। বৃষ্টির কারণে আর কোথাও থামতে পারিনাই। গাড়ি একদম হোটেলের সামনে নামিয়ে দেয়। ড্রাইভারকে কিছু বকশিস এবং ধন্যবাদ জানিয়ে হোটেলে চলে গেলাম।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
ভারী তুষারপাত: মার্চ ১৫, ২০২৩ দুপুর ২:৩০

গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি

হোটেল থেকে গাড়ি ঠিক করলে অনেক সময় খরচ কম হয়। তাই হোটেলের ম্যানেজার কে বললাম, আমরা শিলিগুড়ি যাবো। দেখেন কোনো গাড়ি ব্যবস্থা করে দেয়া যায় কিনা। উনি কয়েক জায়গায় কল করে ৪০০০ রুপিতে গাড়ি ঠিক করে দিলো। বললো ৩০ মিনিটের মধ্যে গাড়ি চলে আসবে। আমরা এই ফাঁকে পাশের রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।

টাটা সাফারি মডেলের গাড়িটি বেশ নতুন এবং ভালো। কথায় কথায় ড্রাইভার জানালো ট্রিপ নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে এসেছেন। ফেরার পথে আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বেশ আরামে শিলিগুড়ি চলে আসলাম। উনি আমাদের একটা হোটেলের সামনে নামিয়ে দিলো। হোটেলের কন্ডিশন খুব একটা ভালো ছিলোনা। রাত হয়ে যাবার কারণে আর ঘুরাঘুরি না করে এখানেই রাত্রিযাপন করলাম।

আগামীকাল আমাদের শপিং এবং শিলিগুড়িতে ঘুরাঘুরি করার প্ল্যান আছে। পরশুদিন আমরা বাংলাদেশে যাবো।

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ
তুষারাচ্ছন্ন সড়ক: মার্চ ১৫, ২০২৩ দুপুর ৩:২০

ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ নিয়ে কিছু পরামর্শ

  • সাথে পর্যাপ্ত পরিমানে শীতের কাপড় নিয়ে যাবেন।
  • পুলিশ চেকপোস্ট থেকে কর্পূর কিনে নিবেন।
  • শ্বাসকষ্ট এড়াতে বেশি বেশি পানি খাবেন।
  • লেকের কাছের রেস্টুরেন্ট থেকে প্লাস্টিকের জুতা ভাড়া নিয়ে নিবেন।
  • এখানে আবহাওয়া দ্রুত বদলায়। তাই সুন্দর ভিউ পেলে ছবি তুলে নিবেন।

সিকিম ভ্রমণের গল্প

আমার ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ কাহিনী আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন। সিকিম ভ্রমণের আরো অভিজ্ঞতা জানতে বাকি পর্ব গুলো দেখে নিতে পারেন। আশাকরি ভালো লাগবে। ছাঙ্গু লেক ভ্রমণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

5 2 ভোট
রেটিং

লেখক

Rashedul Alam; Rasadul Alam; founder of cybarlab.com; founder of trippainter.com; trippainter.com; cybarlab.com; Bangladeshi travel blogger; Bangladeshi blogger; Bangladeshi software engineer

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx