খাসমহল জামে মসজিদ বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশ বান্ধব মসজিদ। এই মসজিদ নির্মাণে প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা মাথায় রাখা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ দেখতে খুবই সুন্দর। এই মসজিদ কেন্দ্রীয় খাসমহল জামে মসজিদ বা চরফ্যাশন খাসমহল জামে মসজিদ (Charfashion Khashmohol Jame Moshjid) নামেও পরিচিত।
খাসমহল জামে মসজিদ
চরফ্যাশন পৌরসভার উদ্যোগে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যায়ে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০২৩ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। গ্রাউন্ড ফ্লোরসহ তিন তলার এই মসজিদে প্রায় সাড়ে চার হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবে। এর আয়তন প্রায় ১৭ হাজার বর্গফুট।
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টোন চিপসের সমন্বয়ে ফেয়ার ফেস সাদা সিমেন্টের প্লাস্টার দ্বারা এই মসজিদের প্রতিটি দেয়াল আবৃত। দেয়ালে সিরামিক ইটের গাঁথুনিতে এমনভাবে ফাঁকা রাখা হয়েছে তাতে সার্বক্ষণিক তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। এর ফলে বৈদ্যুতিক পাখা ছাড়া অন্য কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হবে না। এই মসজিদের ওপরে মাকড়সা আকৃতির কাচের গম্বুজ বসানো হয়েছে। এর ফলে দিনের বেলায় সূর্যের আলো সরাসরি মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে।
মুসল্লিদের শ্বাস-প্রশ্বাস বহির্গমনের জন্য ওপরে এবং নিচে সেন্ট্রাল অ্যাডজাস্ট ফ্যান ও পাইপ বসানো আছে। আন্ডারগ্রাউন্ডে বিশাল আকারে এবং উন্নতমানের অজুর স্থান এবং টয়লেট আছে। টয়লেটে হাই কমোড ব্যবহার করা হয়েছে। এই মসজিদে মহিলাদের নামাজ আদায় করার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।
এই মসজিদের চারপাশ খুবই সুন্দর। মসজিদের সাথে আছে সুউচ্চ জ্যাকব টাওয়ার, সুন্দর রাস্তা, খোলা জায়গা, ফুলের বাগান, শিশুপার্ক ইত্যাদি।
কোথায় অবস্থিত
খাসমহল জামে মসজিদ বাংলাদেশের ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ফ্যাশন স্কয়ার এ অবস্থিত। ভোলা শহর থেকে এর দুরুত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
কিভাবে যাবেন
খাসমহল জামে মসজিদ দেখার জন্য আপনাকে আসতে হবে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায়। চরফ্যাশন আপনি বিভিন্ন ভাবে যেতে পারেন। তবে সব থেকে সহজ উপায় হলো লঞ্চ। প্রতিদিন ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলা শহর এবং এর আশেপাশের বিভিন্ন জায়গার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়।
লঞ্চ থেকে নেমে বাস বা অটো রিকশা নিয়ে চলে আসবেন চরফ্যাশন বাজার। তবে ঝামেলা এড়াতে এবং সহজে আসতে চরফ্যাশন এর লঞ্চ ব্যবহার করতে পারেন। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে চরফ্যাশন এর উদ্দেশে বেশ কিছু লঞ্চ ছেড়ে যায়। তাদের মধ্যে কর্ণফুলী, ফারহান, তাশরিফ, টিপু উল্লেখ যোগ্য।
কর্ণফুলী-১২, কর্ণফুলী-১৩ খুবই সুন্দর এবং বিলাস বহুল। এগুলা ভোর ভোর পৌঁছে যায় বেতুয়া লঞ্চ ঘাট। সেখান থেকে অটো রিকশায় চলে আসবেন চরফ্যাশন বাজার। চরফ্যাশন বাজারেই খাসমহল মসজিদ।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।