ভুটানের দর্শনীয় স্থান

চেলে লা পাস, ভুটান

Loading

চেলে লা পাস

চেলে লা পাস (Chele La Pass) ভুটানের সব থেকে উচু পাস বা গিরিপথ যার উচ্চাতা প্রায় ১৩৫০০ ফুট। মারাত্বক ঠান্ডা আর বরফের জন্য চেলে লা খুবই বিখ্যাত। পারো শহর থেকে হা ভ্যালি যাবার পথে পরে এই পাস।

চেলে লা পাস কোথায় অবস্থিত

ভূটানিজ জোংখা ভাষায় ‘লা’ মানে পাস অর্থাৎ গিরিপথ। ভূটানে এক ভ্যালি থেকে আরেক ভ্যালিকে ভাগ করেছে এই পাস বা গিরিপথগুলো। চেলে লা পাস ভাগ করেছে পারো ভ্যালি ও হা ভ্যালি কে। এক ভ্যালি থেকে আরেক ভ্যালি তে যেতে হলে এই রকম কিছু পাস কেই পার হয়ে যেতে হয়।

ভূটানে অনেকগুলো পাস বা গিরিপথ রয়েছে। চেলে লা তার মধ্যে অন্যতম। পারো শহর থেকে প্রায় দুই ঘন্টা আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পারি দিয়ে হা ভ্যালির দিকে গেলে মিলবে এই পাস। পারো থেকে এর দুরুত্ব প্রায় ৩৭ কিলোমিটার। এই গিরিপথ সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত।

চেলে লা পাসে কি দেখবেন

দোচুলা পাস মতো এখানে গাছপালা নাই। দূরে ভুটান-চায়না সীমান্তে পাহাড়ের উপর মেঘ দেখা যায়, দেখে মনে হয় বিশাল কোনো ছাদ। এক পাশে হা ভ্যালির কিছু এলাকা দেখা যায়। চেলে লার উপর থেকে সব কিছু অনেক ছোট ছোট মনে হয়।

পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে চোখে পড়বে লাটিমের মতো এক ধরনের স্তুপ। এর নাম ‘সা সা’ (tsa tsa)। বৌদ্ধ ধর্মের লোকেরা এগুলা বসায় পুণ্যের আসায়। আরো দেখা যাবে অজস্র প্রেয়ার ফ্ল্যাগ। মূল রাস্তা থেকে একটু উপরে আছে একটি মোবাইল টাওয়ার। দোচুলা পাস দিয়েই হা ভ্যালি যেতে হয়।

চেলে লা যাবার রাস্তা দারুন সুন্দর এবং ভয়ঙ্কর। মূল চেলে লা পাস থেকে সেখানে যাবার সময়ই বেশি আনন্দ পাওয়া যায়। আসে পাশের গাছপালা গুলো বেশ কালারফুল। মনে হয় যেন কেউ সাজিয়ে রেখেছে। আসলে সব কিছুই প্রাকৃতিক। কিছুক্ষন পর পর বিভিন্ন রকমের জীবজন্তু সামনে পরে। বনজংগলে বন্য গরুর ঘুরে বেড়ায়। যাবার সময় রাস্তায় বরফের দেখা পাবেন।

চেলে লা পাস কিভাবে যাবেন

চেলে লা পাস ভ্রমণ করতে হলে প্রথমেই আপনাকে আসতে হবে ভুটান। ভুটান আকাশ পথে এবং সড়ক পথে, দুই ভাবেই আসা যায়। যদি প্লেনে আসেন তাহলে, প্লেন আপনাকে পারো শহরে নামিয়ে দিবে। পরে পারো থেকে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাবেন চেলে লা পাস। আর যদি সড়ক পথে আসেন তাহলে, জয়গাঁ/ফুন্টশোলিং বর্ডার দিয়ে প্রথমে ফুন্টশোলিং শহরে আসবেন। পরে ফুন্টশোলিং থেকে ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাবেন চেলে লা।

কি খাবেন

চেলে লা পাসে তেমন কোনো খাবারের দোকান নাই। তবে হালকা কিছু জিনিস যেমন: বিস্কুট, কোল ড্রিংস, ফল ইত্যাদি পাবেন। অবাক বিষয়, এতো উপরে হবার পরেও ভুটানের অন্যান্য এলাকা থেকে এই সব জিনিসের দাম খুব বেশি হেরফের হয় না। যদিও এগুলো তাদেরকে ট্যাক্সি করে এতো উপরে নিয়ে যেতে হয়। ভারী খাবার খেতে চাইলে পারো শহরে এসে খেতে হবে।

সতর্কতা

চেলে লা যাবার রাস্তা বেশ খাড়া, আঁকাবাঁকা এবং ভয়ঙ্কর। তাই ড্রাইভার কে সাবধানে গাড়ি চালাতে বলবেন। বরফে নামার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা পা পিছলে পরে যাবার সম্ভবনা আছে। চেলে লা ১৩৫০০ ফুট উঁচুতে হওয়ার কারণে মাউন্টেন সিকনেস হতে পারে। এতে শরীরের অক্সিজেন লেভেল কমে যায়। তাই শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘুড়ানো বা বমি হতে পারে। তাই বেশি বেশি করে পানি খাবেন। কিছু ঔষধ আছে যা দেহের অক্সিজেনর পরিমান বাড়ায়। সেগুলা খেতে পারেন। খুব বেশি কিনারে যাবেন না, পা পিছলে পরে যেতে পারেন। ছবি তোলার সময় কোথায় দাঁড়াচ্ছেন তা দেখে নিবেন।

4.5 2 ভোট
রেটিং

লেখক

Rashedul Alam; Rasadul Alam; founder of cybarlab.com; founder of trippainter.com; trippainter.com; cybarlab.com; Bangladeshi travel blogger; Bangladeshi blogger; Bangladeshi software engineer

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
2 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

2
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx