ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য

সেন্ট মার্টিন এর সব হোটেল

Loading

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
napittochara-trail-3
সেন্ট মার্টিন এর রিসোর্ট
napittochara-trail-3
সেন্ট মার্টিন এর রিসোর্ট
napittochara-trail-3
সেন্ট মার্টিনে বার বি কিউ
Shadow

সেন্ট মার্টিন পৌঁছে থাকা নিয়ে মানুষ সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পরে। তাই আগে থেকেই বুকিং করে যাওয়া অথবা ভালো ধারণা নিয়ে যাওয়া উত্তম। আসুন জেনে নেই সেন্ট মার্টিন এর সব হোটেল, রিসোর্ট এবং কটেজ সম্পর্কে। আরো পড়তে পারেন সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ গাইড এবং সেন্ট মার্টিনে কখন কি করবেন

সেন্টমার্টিনের হোটেল নিয়ে কিছু কথা

সেন্ট মার্টিনে থাকার জন্য এখন বেশ কিছু উন্নত মানের হোটেল, রিসোর্ট এবং কটেজ আছে। এদের ভাড়া সিজন এবং ছুটির দিনে কম বেশি হয়। চেক আউট সময় সকাল ১১ টা। তবে আলোচনা সাপেক্ষে ১/২ ঘন্টা বাড়ানো যায়। এছাড়া বেশিরভাগ জায়গায় চেকআউটের পর ব্যাগ অভ্যর্থনা কক্ষে রাখার এবং ফ্রেশ হবার সুবিধা থাকে।

আবাসিক হোটেলগুলো মূলত মেইন জেটি বা বাজারের আশেপাশে অবস্থিত। আর রিসোর্ট গুলো পূর্ব ও পশ্চিম দিকে বীচের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। সুযোগ সুবিধার দিক থেকে রিসোর্টগুলো হোটেলের চেয়ে অনেক ভালো। বেশিরভাগ রিসোর্টের রয়েছে নিজস্ব রেস্তোরাঁ, বার-বি-কিউ এর ব্যবস্থা। আর বীচের পারে হওয়াতে এগুলো থেকে বেশ ভালো ভাবে সমুদ্র উপভোগ করা যায়। এগুলোর অসুবিধা একটাই। বাজার বা মেইন জেটি থেকে কিছুটা দূরে।

সেন্ট মার্টিন এর সব হোটেল

সেন্ট মার্টিন এর কিছু হোটেল এবং রিসোর্টের নাম, ফোন নাম্বার নিচে দেয়া হলো। সবগুলোর লোকেশন গুগল ম্যাপস এ দেয়া আছে। যাবার আগে কষ্ট করে একটু দেখে নিলে ভালো হয়।

কোরাল ভিউ রিসোর্ট (Coral View Resort)

পূর্ব দিকের বীচে যতগুলো রিসোর্ট আছে তার মধ্যে এটি সব থেকে পরিপাটি। হ্যমক, বসার জায়গা, রেস্তোরাঁ সব কিছু আছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী এটি পরিচালনা করে। এটি বাজার থেকে খুব বেশি দূরে নয়। তবে সমস্যা হলো পূর্ব দিকের বীচে সমুদ্রের ঢেউ বেশি থাকেনা। ঢেউ অনেকটা নদীর মতো। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। রুম ভাড়া: ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৯৮০-০০৪৭৭৭, ০১৯৮০-০০৪৭৭৮, ০১৭১৩-১৯০০১৩, ফেইসবুক পেইজ

ব্লু মেরিন রিসোর্ট (Blue Marine Resort)

জেটির খুব কাছেই এর অবস্থান। তিন তলা এই হোটেলে ৩৪ টি বিলাসবহুল রুম আছে। ডাবল এসি রুম ভাড়া ১৫,০০০ টাকা, ডাবল নন-এসি রুম ভাড়া ৫,০০০ টাকা, ট্রিপল বেডের রুম ভাড়া ৩,০০০ টাকা, ছয় বেডের রুম ভাড়া ৪,০০০ টাকা, এবং দশ বেডের রুম ভাড়া ৫,০০০ টাকা। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। রুম থেকে সরাসরি সমুদ্র দেখা যায় না। যোগাযোগ: ০১৭১৩-৩৯৯০০১, ০১৮১৭-০৬০০৬৫

প্রাসাদ প্যারাডাইস রিসোর্ট (Praasad Paradise Resort)

বাজারের ভিতর দিয়ে ব্লু মেরিন রিসোর্ট পার হয়ে আরো কিছুটা উত্তরে দিকে এর অবস্থান। এখানে মোট ১৬ টি রুম আছে। ভাড়া ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। বিচ থেকে একটু দূরে বলে কয়েকটি রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। যোগাযোগ: ০১৯৯৫-৫৩৯২৪৮, ০১৮৮৩-৬২৬০০৩, ০১৫৫৬-৩৪৭৭১১

নীল দিগন্তে রিসোর্ট (Neel Digante Resort)

দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে এর অবস্থান। সমুদ্র পাড়ের রিসোর্টগুলোর মধ্যে নিলদিগন্ত অন্যতম, বেশ গুছানো এবং পরিপাটি। এখানে নানা ধরণের কটেজ টাইপের টিনশেড ঘরে ৩৮ টি রুম আছে। ভাড়া ২,০০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা। তবে জেটি থেকে একটু দূরে হওয়ায় ২০০ টাকা ভ্যান ভাড়া লাগে। রুম থেকে বিচ দেখা যায় না। এখানে নিজস্ব রেস্টুরেন্ট, বার-বি-কিউ, মিউজিক এর ব্যস্থা আছে। এর ওয়াচ টাওয়ার থেকে সমুদ্র দর্শন বেশ উপভোগ্য। যোগাযোগ: ০১৭৩০-০৫১০০৪, ০১৭৩০-০৫১০০৫, ০১৭৩০-০৫১০০৬, ০১৭৩০-০৫১০০৭

সায়রী ইকো রিসোর্ট (Shayari Eco Resort)

পরিবেশের কথা মাথায় রেখে যথা সম্ভব স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি এই রিসোর্ট দেখতে দারুন। আয়তনের দিক থেকে এটি সেন্ট মার্টিনের সবচেয়ে বড় রিসোর্ট। সেন্ট্রাল সোলার সিস্টেম থাকায় ২৪ ঘণ্টা লাইট এর সুবিধা পাওয়া যায়। তবে ফ্যান গুলো রাট ১২ টা পর্যন্ত চালু থাকে।

এদের নিজস্ব রেস্টুরেন্ট, কফি জোন, দোকান, ওয়াচ টাওয়ার আছে। প্রাইভেট বীচ, বীচ চেয়ার, হেমক, বোতলের তৈরি বোট গেস্টদের জন্য ফ্রী। এর ছেঁড়া দ্বীপ যেতে চাইলে বা স্কুবা করতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেয়। তবে এটি জেটি থেকে বেশ দূরে। যোগাযোগ: ০১৭১১-২৩২৯১৭, ০১৯১৯-১১১২১১, ফেইসবুক পেইজ

মিউজিক ইকো রিসোর্ট (Music Eco Resort)

জেটি থেকে বেশ দূরে দক্ষিণ দিকে টাইডাল বিচের কাছে এর অবস্থান। এই রিসোর্ট একটু আলাদা। তাবু এবং কন্টেইনার থাকার জন্য ব্যবহার করা হয়। ভিতরে গ্রাম্য পরিবেশ, আনলিমিটেড ফ্রি ডাব, খেলাধুলার জায়গা, কিচেন সুবিধা আছে। প্রকৃতি প্রেমীদের নিরিবিলি ২ দিন থাকার জন্য এই রিসোর্ট বেস্ট। যাবার আগে অগ্রিম বুকিং দিয়ে যাবেন। রুম ভাড়া ৪,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৩০৪-১২২৭৮৮, ফেইসবুক পেইজ, ওয়েব: musicecoresort.com

ব্লু লেগুন রিসোর্ট (Blue Lagoon Resort)

দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে এর অবস্থান। রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। প্রতি রুমে ২/৪ জন থাকা যায়। যোগাযোগ: ০১৮১৫-০১২৩০৬, ০১৭৫৫-০২৮৯৯৩।

পান্না রিসোর্ট (Panna Resort)

পশ্চিম বীচে এর অবস্থান। এটি সমুদ্রের পারে রিসোর্টগুলোর মধ্যে অন্যতম। রুম ভাড়া ১৫০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭৬৫-১৫২৫৬৫।

সীমানা পেরিয়ে রিসোর্ট (Shimana Periye Resort)

পশ্চিম বীচে এর অবস্থান। এখানে ১৪ টি রুম আছে। রুম ভাড়া ২,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। যোগাযোগ: ০১৯১১-১২১২৯২, ০১৭২২-১০৯৬৭০, ০১৭৩৫-৫৮১২৫১, ০১৭৭৫-০১১২০৮।

প্রিন্স হেভেন রিসোর্ট (Prince Heaven Resort)

উত্তর বিচে এর অবস্থান। এখানে মোট ২৪ টি রুম আছে। রুম ভাড়া ১,৫০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। যোগাযোগঃ ০১৯৯৫-৫৩৯ ২৪৬, ০১৮৮৩-৬২৬ ০০২

সী ইন রিসোর্ট (Sea In Resort)

বাজার থেকে ৫ মিনিট হেটে গেলেই এর অবস্থান। এখানে ২৬ টি রুম আছে। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট নেই। এখন থেকে সমুদ্র দেখা যায় না। রুম ভাড়া ২,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭২২-১০৯৬৭০, ০১৭৩৫-৫৮১২৫১, ০১৭৭৫-০১১২০৮।

সী প্রবাল রিসোর্ট (Sea Probal Resort)

উত্তর বিচে এর অবস্থান। এখানে ১৬ টি রুম আছে। তাদের মধ্যে কেবল ৪ টি রুম থেকে সমুদ্র দেখা যায়। এর নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। রুম ভাড়া ২,০০০ থেকে ৪,০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৮৩৩-৩৬০৩৩৩।

লাবিবা বিলাস রিসোর্ট (Labiba Bilas Resort)

পশ্চিম বীচে এর অবস্থান। বর্তমানে এটি দ্যা আটলান্টিক নামে পরিচিত। এখানে ৪৩ টি রুম আছে। রুম ভাড়া ১,৬০০ থেকে ৪,০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭৪৪-১৩৬১৪৫, ০১৮৩৪-২৬৭৯২২।

সমুদ্র কুটির রিসোর্ট (Somudra Kutir Resort)

দক্ষিণ বিচের কোনাপাড়ায় এর অবস্থান। রুম ভাড়া ২,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৮৫৮-২২২৫২১।

এর বাহিরেও সেন্টমার্টিনে আরো হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ আছে। নিয়মিত এদের সংখ্যা বাড়ছে। আপনার সুবিধামতো যেকোন একটি বেছে নিন।

টিপস

সেন্টমার্টিনে হোটেল বা রিসোর্ট বুক করার সময় এর অবস্থান, দূরত্ব, রেস্টুরেন্ট, নিরাপত্তা ইত্যাদি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো। রুম ভাড়া করার সময় ভালো ভাবে দরদাম করে নিবেন। সাধারণত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত রুম ভাড়া বেশি থাকে। সাথে ফ্যামিলি থাকলে আগে থেকেই বুকিং করে যাওয়া ভালো।

একটু বেশি সস্তায় রুম পেতে চাইলে জেটিতে জাহাজ পৌঁছার ২/৩ ঘন্টা পরে রুম খুঁজা শুরুর করুন। পৌঁছে লাঞ্চ করে অপেক্ষা করতে থাকুন। সবার রুম নেয়া হলে গেলে আপনি যাবেন। তখন হোটেল কতৃপক্ষ বুজে যায় আর কেউ আসবেনা। আর অনেক ছাড়ে রুম দিয়ে দেয়।

4.8 8 ভোট
রেটিং

লেখক

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
2 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

2
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx