সাধারণত নিজ দেশ থেকে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করতে গেলে সেই দেশের অনুমোদন নিতে হয়। কিছু দেশের ক্ষেত্রে এই অনুমোদন আগে থেকে নিতে হয়। আবার কিছু দেশ সেই দেশে প্রবেশ করার সময় দেয়। এই অনুমোদন কেই ভিসা বলে। বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া ভ্রমণ করতে গেলে আগে থেকেই ভিসা নিতে হয়। আর এই ভিসা ইন্ডিয়ান হাই কমিশন প্রদান করে থাকে। আসুন জেনে নেই ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করার নিয়মাবলী।
ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করার নিয়ম
আগে এক সময় ইন্ডিয়ান ভিসা বা ভারতের ভিসা নেয় অনেক কঠিন ছিল। তার জন্য ই-টোকেন নেয়া, নানা ধরণের পেপারস, দালাল ধরা আরো কত কি। এখন বাংলাদেশিদের জন্য ইন্ডিয়ান ভিসা নেয়ার পক্রিয়া অনেক সহজ হয়েছে। কোনো প্রকার দালাল না ধরে বাসায় বসে অনলাইনে আবেদন করে, সহজেই পেতে পারেন ইন্ডিয়ান ভিসা। সাথে কিছু সাপোর্টিং পেপারস দিতে হয়। সব ঠিক থাকলে এক সপ্তাহের ভিতরেই পায়ে যাবেন ইন্ডিয়ান ভিসা।
এই ওয়েবসাইটে যান। এখান থেকে আপনি নতুন আবেদন করতে পারেন অথবা পূর্বে আবেদন করা ফর্মের বর্তমান অবস্থা জানতে পারেন। নতুন আবেদন করার জন্য অনলাইন ভিসা এপ্লিকেশন বাটনে প্রেস করুন। প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ছবি আপলোড করে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন। তার পর এটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করুন। এবার উপরে ২/২ ইঞ্চি সাইজের ছবি আঠা দিয়ে যুক্ত করুন।
এর পর দোকান থেকে ইউক্যাশ এর মাধ্যমে ভিসা ফি পরিশোধ করুন। ক্রেডিট কার্ড থাকলে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে বাসায় বসেই ফি প্রধান করা যায়। আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি এবং পাসপোর্ট আপনার নিকটস্থ ভারতীয় ভিসা সেন্টারে জমা দিন। সাথে আরো কিছু পেপারের কপি দিতে হবে। যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র, পেশার সার্টিফিকেট বা এনওসি, বর্তমান ঠিকানার কোনো ইউটিলিটি বিল, ডলার এনডোর্সমেন্ট। ক্রেডিট কার্ড থাকলে ডলার এনডোর্সমেন্ট না করে কার্ডের কপি দিতে পারেন। আপনার পূর্বের মেয়াদ উত্তীর্ণ একাধিক পাসপোর্ট থাকলে সবগুলো সাথে দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে তারা আপনার আবেদন গ্রহণ করে জমা স্লিপ দিবে। স্লিপলে পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় দেয়া থাকবে। এর পর নির্ধারিত সময়ে গিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
ইন্ডিয়ান ভিসা ফি
বর্তমানে ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেসসিং ফি ৮০০ টাকা। এই ফি ইউক্যাশ বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পেমেন্ট করা যায়। মনে রাখবেন ভিসা সেন্টারে কোন ক্যাশ টাকা দেয়া যায় না। ফর্ম জমা দেয়ার আগেই পেমেন্ট করে নিতে হবে। পেমেন্ট করার সময় আপনার আবেদনের ওয়েব ফাইল নম্বর অবশ্যই টাইপ করে দিবেন।
ফর্ম পূরণ করার নিয়ম
- বাধ্যতামূলক কলাম (লাল ষ্টার দেয়া) সতর্কতার সাথে অবশ্যই পূরন করুন।
- আবেদনকারীর সকল ইনফরমেশন তার পাসপোর্টের সাথে মিল থাকতে হবে। যেমন নাম, পাসপোর্ট নং, ইস্যুকৃত স্থান, ইস্যুকৃত তারিখ, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ইত্যাদি।
- আবেদনকারীর যোগাযোগের বর্তমান ঠিকানা, সাথে জমা দেয়া ইউটিলিটি বিলের কপির সাথে মিল রেখে হতে হবে।
- ই-মেইল আইডি ও মোবাইল নাম্বার সঠিক হতে হবে।
- পারিবারিক বিবরণ, পূর্ববর্তী ভ্রমণ তথ্য খালি রাখে উচিত হবে না।
- দুই জন মানুষ কে রেফারেন্স হিসাবে দেয়ার সময় তার সঠিক তথ্য প্রাদান করুন।
- আপলোড করা ছবি এবং ফর্মের প্রিন্ট কপির সাথে দেয়া ছবি একই হতে হবে। ছবি তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে তোলা হলে ভালো হয়।
- ভিসা আবেদনের শেষের পাতায় স্বাক্ষর করুন।
- ভবিষ্যৎ অনুসন্ধানের জন্য ওয়েব ফাইল নম্বর নোট করে রাখুন।
- আপনার আইপি এড্রেস সংরক্ষণ করা থাকে। তাই কল্পিত/বানোয়াট এন্ট্রি দিবেন না।
ভিসার আবেদন ফর্ম কোথায় জমা দিবেন
বাংলাদেশে প্রায় প্রত্যেক বিভাগে ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টার রয়েছে। একে কে আইভ্যাক সেন্টার বলে। আপনি যে বিভাগের বাসিন্দা তথা বর্তমান ঠিকানা দিবেন সেই বিভাগের আইভ্যাক সেন্টারে ফর্ম জমা দিবেন। যেমন ঢাকা বিভাগের লোকেরা আইভ্যাক, ঢাকা (যমুনা ফিউচার পার্ক) এ জমা দিবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।