বাংলাদেশের এক ঐতিহ্যবাহী নাস্তা হিসেবে খুদের ভাত বা বৌ ভাত বা খুদের ভাকা বেশ পরিচিত। সকাল বেলা নানা রকমের ভর্তার সাথে এই খাবার খেতে বেশ মজা। অনেক এলাকায় এটি বেশ জনপ্রিয় খাবার। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার কাছে সোহানা হোটেলের খুদের ভাত বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছে, যা ইনসার আলীর খুদের ভাত (Insar Alir Khuder Vaka) নাম পরিচিত।
ইনসার আলীর খুদের ভাত কোথায় অবস্থিতি
ইনসার আলীর খুদের ভাতের সোহানা হোটেল বাংলদেশের ঢাকা জেলার, কেরানীগঞ্জ উপজেলার রোহিতপুর গ্রামে অবস্থিত। এই হোটেলের মালিক ইনসার আলী। ইনসার আলী সাহেবের পাঁচ সন্তান। সবার ছোট মেয়ের নাম সোহানা। তার নামেই সোহানা হোটেল। এই হোটেলে শুরুতে ভাত, পরোটা, পুরি, সিঙ্গারা, পেঁয়াজুর ইত্যাদি নানান ধরনের খাবার পাওয়া গেলেও, এখন শুধু খুদের ভাত-ভর্তাই এর প্রধান আকর্ষণ।
ইনসার আলীর খুদের ভাত কেন এতো জনপ্রিয়
সাধারণত ধান ভাঙানোর পর চালের সাথে ছোট ছোট যে চাল পাওয়া যায় তাই খুদ। এই খুদ দিয়ে ইনসার আলী পোলাও এর মতো করে ভাত রান্না করেন। চিংড়ি, শুঁটকি, বেগুন, আলু, কালো জিরা, সরিষা, মরিচসহ ১০ আইটেমর ভর্তা আর ডিম্ ভাজি দিয়ে এই ভাত পরিবেশন করা হয়। ডিম্ বাজার স্টাইলটা একটু আলাদা। সব মিলিয়ে এর টেস্ট অসাধারণ। প্রতি প্লেটের দাম মাত্র ৫০ টাকা।
শুরুর দিকে খুদের ভাত এলাকার লোকজনের মাঝে খুব একটা সারা ফেলতে পারে নাই। কেননা এই খাবার তারা বাসায় মাঝে মধ্যেই খায়। তাই হোটেলে বসে খাওয়া তাদের কাছে অনেকটা বিলাসিতার মতো। কিন্তু বছরখানেক পর একদিন কয়েকজন সাইক্লিস্টের একটি দল আসে সোহানা হোটেলে। তারা ইনসার আলীর খুদের ভাত খেয়ে অনেক তৃপ্তি পায়।
ফিরে গিয়ে তারা এই খাবার নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তা দেখে আগ্রহী হন আরো অনেক ভোজনরসিক মানুষ। খুব দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে ধীরে ধীরে ইনসার আলীর খুদের ভাতের নামডাক ছড়িয়ে পড়ে দূর-দূরান্তে। গ্রাহকদের অনুরোধে তখন তিনি ভর্তার সঙ্গে ডিম ভাজিও যোগ করেন। এখন ঢাকা শহরের নানা প্রান্ত ও আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোজনরসিক মানুষেরা নিয়মিত সোহানা হোটেলে ভিড় জমান।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলে বছিলা ব্রিজ। ব্রিজ পার হয়ে এগিয়ে গেলে আঁটিবাজার। সেখান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরেই রোহিতপুর বাজার। বাজার থেকে বাম দিকে গোয়ালখালী বাজার পার হয়ে অল্প একটু দূরেই সোহানা হোটেল।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে সরাসরি চলে যেতে পারেন রোহিতপুরের সোহানা হোটেল। অথবা লেগুনা দিয়ে প্রথমে আঁটিবাজার, সেখান থেকে শেয়ার সিএনজি দিয়ে গোয়ালখালী বাজার। ভাড়া নিবে ১০ + ৪০ = ৫০ টাকা। এছাড়া গুলিস্থান থেকে নবাবগঞ্জগামী বাসে রোহিতপুর নেমে অটো রিক্সা দিয়ে চলে যাবেন সোহানা হোটেল।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
সোহানা হোটেলের যাত্রাপথে আরো কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। সময় থাকলে ভিজিট করতে পারেন। এটি আপনার ভ্রমণকে ভিন্ন মাত্রা দিবে। তেমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থান হলো:
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।