হাওর এলাকার একটি জনপ্রিয় প্রবাদ হচ্ছে, ‘বর্ষায় নাও আর শুকনায় পাও’। অর্থাৎ বর্ষাকালে নৌকায় আর শুকনো মৌসুমে পায়ে হেটে চলো। তবে এখন আর সেই সময় নাই। এখন হওর এলাকায় সারাবছর চলাচল করার জন্য তৈরি হয়েছে উঁচু পাকা সড়ক এবং সাব-মার্সিবল সড়ক। তাদের মধ্যে অন্যতম ইটনা মিঠামইন অষ্টগ্রাম সড়ক এখন পর্যটকদের বর্ষাকালের সেরা গন্তব্য।
ইটনা মিঠামইন অষ্টগ্রাম সড়ক কোথায় অবস্থিত
কিশোরগঞ্জের হাওর সমৃদ্ধ তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের মানুষদের সারা বছর সড়ক পথে চলাচল করার জন্য ৪৭ কিলোমিটার উঁচু পাকা সড়ক ও ৩৫ কিলোমিটার সাব-মার্সিবল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এটিই “ইটনা মিঠামইন অষ্টগ্রাম সড়ক” নামে পরিচিত। এই সড়ক পথে ২২টি পাকা সেতু, ১০৪টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন নদীতে ৫টি ফেরি চালু করা হয়েছে। এখন সড়ক পথে ভ্রমণ করে শীত বা গ্রীষ্ম যেকোন সময়ই হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যাবে।
ইটনা মিঠামইন অষ্টগ্রাম সড়ক কিভাবে যাবেন
এই সড়ক বিভিন্ন ভাবে যাওয়া যায়। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে করিমগঞ্জ বালিখোলা ঘাট যেতে হবে। সেখান থেকে ফেরি পার হয়ে মিঠামইন। এখান থেকে “ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম” সড়ক ধরে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন। অথবা ইটনা যেতে পারেন। তবে যে পথেই যান না কেন ফেরের পথে আবার অন্য পথে যাবেন। তাহলে পুরু পথের মজা পাবেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলা হয়ে অষ্টগ্রাম যাওয়া যায়। বাজিতপুর থেকে দীঘির পার লঞ্চ ঘাট থেকে লঞ্চ/নৌকায় নদী পার হয়ে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন। সেখান থেকে “ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম” সড়ক ধরে করিমগঞ্জের বালিখোলা হয়ে কিশোরগঞ্জ শহরে ফেরত আসা যায়। আসার পথে ইটনা ঘুরে আসবেন।
কোথায় খাবেন
মিঠামইন, অষ্টগ্রাম বাজারে মোটামোটি মানের খাবার হোটেল আছে। সেখানে খেতে পারেন। হাওরের তাজা মাছ, গরু, মুরগি ইত্যাদি সব খাবারই পাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
মিঠামইন বা অষ্টগ্রাম সরকারি ডাক বাংলোতে থাকতে পারেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ শহরে এসে থাকতে পারেন।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
এই সড়কের আশেপাশের আছে বেশি কিছু হাওড়। সবগুলোরই দেখার মতো এবং সৌন্দর্যে ভরপুর। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো:
সতর্কতা
হাওর অনেক বিশাল। অনেক জায়গায় বেশ গভীর। তাই সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না। সাথে লাইফ জ্যাকেট রাখুন। এক নৌকায় বেশি লোক উঠবেন না। নৌকায় বেশি লাফালাফি করবেন না। তাহলে নৌকা ডুবে যেতে পারে। নৌকা ভাড়া করার সময় দরদাম করে নিবেন। এবং অবশ্যই উপরে ছামনি আছে তেমন নৌকা নিবেন। মোটর সাইকেল সাথে থাকলে সাবধানে চালাবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।