
নদীমাতৃক বাংলাদেশে লঞ্চ ভ্রম খুবই আরামদায়ক এবং উপভোগ্য। লঞ্চ এ ভ্রমণ করলে বাস বা ট্রেন এর মতো ক্লান্তি আসেনা। ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন প্রচুর লঞ্চ দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বেশির ভাগ লঞ্চ সাধারণত রাতে চলাচল করে। তবে চাঁদপুর এর লঞ্চ দিনের বেলায় ও চলে। আপনে পরিবার বা বন্ধু বান্ধব নিয়ে সন্ধ্যায় রওনা দিয়ে সকালে ভোলা বা বরিশাল নেমে সারাদিন ঘুরাঘুরি করে আবার সন্ধ্যার লঞ্চ ধরে সকালে ঢাকায় চলে আসতে পারেন।
লঞ্চ এ ভ্রমণ করলে আপনে আশেপাশের অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখতে পারবেন। রাতে ছাদে বসে চাঁদ উপভোগ করতে পারবেন। আরো দেখতে পারবেন নদীতে জেলেদের ইলিশ মাছ ধারা। মাঝ নদীতে সূর্যদয় এবং সূর্যাস্ত খুবই উপভোগ্য। নদীর আশেপাশের গ্রামগুলা ছবির মতো মনে হয়। নদীর পারে গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদি গবাদি পশু ঘাস খেয়ে বেড়ায়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খেলা করে। পাশ দিয়ে লঞ্চ যাবার সময় আশেপাশের বাড়ি থেকে লোকজন বের হয়ে হাত নেড়ে স্বাগত জানায়। নদীর পারের সব কিছু শুধু সবুজ আর সবুজ। ঢাকায় এগুল দেখা যায় না।
লঞ্চ ভ্রমণ করার ভাড়া:
ঢাকা থেকে বরিশাল, ভোলার লঞ্চের ভাড়া :
সিঙ্গেল কেবিন ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ডাবল কেবিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। ডেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। সিঙ্গেল এবং ডাবল দুই ধরণের কেবিন রয়েছে। একটি সিঙ্গেল কেবিনে এক এবং ডাবল কেবিনে দুই টা বেড থাকে। এখন অনেক ভালো ভালো লঞ্চ চলে যাতে আধুনিক অনেক সুবিধাই রয়েছে।
বিলাসবহুল লঞ্চ কর্ণফুলী ১৩ | ঢাকা – বেতুয়া – চরফ্যাশন
কর্ণফুলী ১৩ লঞ্চ ঢাকা-বেতুয়া ( চরফ্যাশন ) রুটের সব থেকে বিলাসবহুল লঞ্চ। লঞ্চটি ৮ই এপ্রিল ২০১৮ সালে ঢাকা-চরফ্যাশন রুটে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। এর ইন্টোরিয়র ডেকোরেশন খুবই চমৎকার। লঞ্চটির অপারেটর ব্রাদার্স নেভিগেশন।
প্রায় ৭৭. ৯০ মিটার দীর্ঘ এই লঞ্চের প্রায় সবগুলো রিভারসাইড কেবিনে রয়েছে বারান্দা, টয়লেট, স্মার্ট টেলিভিশন। বিলাসবহুল লঞ্চটিতে আছে মুভি সার্ভার, কিডস্ জোন, ওয়াইফাইসহ আরো নানান আধুনিক সুযোগ সুবিধা। আরো রয়েছে উন্নত মানের রেস্টুরেন্ট , যেখানে পাওয়া যায় ভাত, মাংস, ফ্রাইড চিকেন, নুডলস, চাইনিজ আইটেম সহ আরো নানান ধরণে খাবার।
লঞ্চটিতে আছে ২৮ টা ডাবল, ৪৩ টা সিঙ্গেল এবং ৬ টি ভি.আই.পি. কেবিন। আর সবগুলো কেবিনই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং স্মার্ট টেলিভিশন সম্পূর্ণ। এর ইঞ্জিনের ক্ষমতা প্রায় ১২০০ অশ্বশক্তি। লঞ্চটি ঢাকা থেকে রাত ৮:৩০ মিনিটে এবং বেতুয়া (চরফ্যাশন) থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টায় ছেড়ে যায়। এ ছাড়াও মঙ্গলসিকদার ঘাট ,তজুমদ্দিন ঘাট, হাকিমুদ্দিন ঘাট থেকেও যাত্রীরা উঠা নাম করতে পারে।
কর্ণফুলী ১৩ এর ভাড়ার তালিকা :
সিঙ্গেল কেবিন – ১০০০/-
সিঙ্গেল আলাদা বাথমরুম, বারান্দা সহ – ১৫০০/-
ডাবল কেবিন – ২২০০/-
ফ্যামিলি কেবিন – ২৫০০/-
ভিআইপি কেবিন – ৫০০০/-
যেকোন তথ্য জানতে এবং কেবিন বুকিংসহ যোগাযোগ – ০১৭৭৯৯৭২৬৪০
লেখক
আমি একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ট্রাভেল ফটোগ্রাফার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে ভীষণ ভালোবাসি। নিজের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করার চেষ্টা করি।