কাশ্মীর (Kashmir) হলো দুনিয়ার বেহেশত। যার নাম শুনলেই সবুজ প্রকৃতির দিকে মন চলে যায়। আহ্, কি সুন্দর করে সাজিয়েছেন এ প্রকৃতি। এর সৌন্দর্য নিয়ে কত কবি কত কবিতা লিখেছেন, কত গল্পকার কত গল্প লিখেছে। সবাই সাজিয়ে তুলেছেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। ভ্রমণপিপাসু সবাই চায় জীবনে একবার হলেও কাশ্মীর ঘুরে আসতে।
কাশ্মীর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
কাশ্মীর মূলত একটি অল ওয়েদার ট্যুরিস্ট এরিয়া। আবহাওয়া ও ভৌগোলিক দিক থেকে এখানে মৌসুম রয়েছে চারটি। গ্রীষ্ম (জুন, জুলাই, আগস্ট), শরৎ (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর), শীত (ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি) এবং বসন্ত (মার্চ, এপ্রিল, মে)। একেক মৌসুমে কাশ্মীরের একেক রূপ। আপনে যেকোনো সময়েই কাশ্মীর যেতে পারেন।
কাশ্মীরে বেড়ানোর সবচেয়ে উপযুক্ত সময় এপ্রিল-অক্টোবর। তবে কাশ্মীরের পরিপূর্ণ রূপ উপভোগ করতে হলে, আপনাকে কমপক্ষে তিনবার যেতে হবে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, যখন বর্ষার শেষে চারিদিকে থাকবে সবুজের সমারোহ, গাছে গাছে ধরবে আপেল। ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি, যখন বরফে ছেয়ে যাবে সব কিছু।
আর এপ্রিল, যখন কাশ্মীরের বিখ্যাত টিউলিপ গার্ডেনে ধরবে ফুল, সাথে থাকবে বরফে ঢাকা পাহাড়ের সারি, রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। আর সব বিবেচনা করে, আপনি যদি একবারের জন্য কাশ্মীর যেতে চান, তাহলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ হবে আপনার জন্য সেরা সময়।
তবে শীতে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে হলে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে। গরম কাপড়, গ্লাভস, বুট অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। এসময় তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে যায়। বরফ জমে, তুষারপাতে জনজীবন অচল হয়ে পরে। জরুরি প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে কেউ বের হয় না।
যারা স্থলপথে যেতে চান, নভেম্বর-এপ্রিল এই ছয় মাস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ তখন বরফ পরে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমার মতে শরৎ কালই সব থেকে বেস্ট। বরফে ঢাকা কাশ্মীর থেকে সবুজ কাশ্মীরই বেশি সুন্দর। আর এখানে কম আর বেশি সব সময়ই ঠান্ডা, বরফ থাকে।
কাশ্মীরের দর্শনীয় স্থান
কাশ্মীরে অনেক গুলো দর্শনীয় স্থান আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
কেমন সময় লাগে
কাশ্মীর অসম্ভব সুন্দর। এখানে রয়েছে প্রচুর সুন্দর সুন্দর স্থান। যার সবগুলোয় ভ্রমণ করতে মোটামোটি এক মাস লেগে যাবে। যাদের প্রচুর টাকা পয়সা রয়েছে এবং হাতে আছে যথেষ্ট সময় তারাই কেবল এমন অভিযানে নামতে পারে। তবে মোটামোটি ভাবে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে হলে ৮-১০ দিন সময়ের প্রয়োজন। তবে আপনার ট্যুর প্ল্যান হিসাবে ২-১ দিন কম বেশি লাগতে পারে।
কাশ্মীর ভ্রমণের খরচ
কাশ্মীর অনেক বড় আর দুর্গম। তাই এখানে খরচ একটু বেশি। একজন মানুষের মোটামোটি ভাবে কাশ্মীর ঘুরে আসতে ৫০-৬০ হাজার টাকার প্রয়োজন। শপিং করলে আরো বেশি যাবে। তবে আপনে চাইলে এটাকে কমিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। কারণ বিভিন্ন দামের হোটেল, খাবার রয়েছে। আপনে কোথায় থাকবেন কি খাবেন তা নিতানন্তই আপনার ব্যপার। সঠিক প্ল্যান থাকলেই কেবল এটা সম্ভব।
কাশ্মীর কিভাবে যাবেন
কাশ্মীর যেতে হলে প্রথমেই আপনার থাকতে হবে ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা। ভারতের ভিসা থাকলে আপনি বিভিন্ন ভাবে ঢাকা থেকে কাশ্মীর যেতে পারেন।
রুট ০১:
ঢাকা থেকে প্লেনে দিল্লি। সেখান থেকে ডমেস্টিক প্লেনে শ্রীনগর। এতে খরচ একটু বেশি পরে। তবে সময় অনেক কম লাগে। ঢাকা থেকে এখানকার সরাসরি কোনো ফ্লাইট আপাদত নাই।
রুট ০২:
ঢাকা থেকে সড়ক পথে বাস/ট্রেন এ কলকাতা বা আগরতলা। সেখান থেকে ডমেষ্টিক প্লেনে দিল্লি। পরে দিল্লি থেকে শ্রীনগর। এতে খরচ একটু কম হয়। তবে কলকাতার পরিবর্তে আগরতলা হয়ে গেলে ভাল। এতে সময় কম লাগে। কলকাতা থেকে দিল্লি প্লেনে যে ভাড়া আগরতলা থেকে একই ভাড়া। ঢাকা থেকে আগরতলা যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘন্টা, যেখানে কলকাতা যেতে লাগে প্রায় ১২ ঘন্টা।
রুট ০৩:
ঢাকা থেকে সড়ক পথে বাস/ট্রেন এ কলকাতা। সেখান থেকে ট্রেনে দিল্লি। দিল্লি থেকে শ্রীনগর।
সময়ে নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আশা করি খুব উপভোগ করেছেন। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্টস করে জানালে ভালো হয়। আর ভালো লেগে থাকলে ওয়ালে শেয়ার করে বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।