চট্টগ্রাম থেকে সন্দীপ আসা-যাওয়ার জন্য কুমিরা-সন্দীপ ফেরীঘাট বা কুমিরা ঘাট (Kumira Ghat) ব্যবহার করা হয়। এই ঘাটে যাত্রীদের যাতায়তের জন্য প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই জেটি স্থানীয় মানুষের কাছে কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরীঘাট ব্রীজ, ঘাটঘর ব্রীজ, কুমিরা ব্রীজ় ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
কুমিরা ঘাটে কি করতে পারেন
ঘাটের শেষ মাথায় পৌঁছালে মনে হবে যেন সমুদ্রের ভিতরে আছেন। এখান থেকে বিশাল বিশাল জাহাজ দেখা যায়। আরো দেখতে পারবেন যাত্রীদের আসা-যাওয়া, জেলেদের মাছ ধরা শেষে ঘাটে ফেরা, শীপ ইয়ার্ড শ্রমিকদের কর্ম তৎপরতা ইত্যাদি। এছাও চাইলে বরশি দিয়ে মাছ ধরতে পারেন। মাছ ধরার বরশি ভাড়ায় পেতে যোগাযোগ করুন:
স্বপন 01867819430,
জাবেদ 01815359419
জাহেদ 01762662413
বোট ভাড়া করে সমুদ্রের আরো মাঝে যেতে পারেন। তখন জাহাজ গুলোকে আরো কাছ থেকে দেখা যায়। বোট ভাড়া জনপ্রতি ১৫/২০ টাকা। এছাড়া এই ঘাট থেকে স্পিড বোট দিয়ে সন্দ্বীপ চ্যানেল পার হয়ে সন্দ্বীপ চলে যেতে পারবেন। ভাড়া জনপ্রতি ২৫০/৩০০ টাকা। সময় নিবে ৩০ মিনিট। সিএনজি ভাড়া করে সন্দ্বীপ ঘাট থেকে সন্দ্বীপের মূল শহর ঘুরে আসতে পারেন। সিএনজি ভাড়া ২০০/২৫০ টাকা।
কুমিরা ঘাট কখন যাবেন
বিকালে কুমিরা ঘাট যাওয়ার সব থেকে আদর্শ সময়। সন্ধ্যায় শীপ ইয়ার্ডের সোডিয়াম লাইটগুলো জ্বলে উঠে। তখন এই ঘাটের সৌন্দর্য অন্যরকম লাগে। তবে সন্দ্বীপ যাবার ইচ্ছা থাকলে আগেই যেতে হবে।
কুমিরা ঘাট কোথায় অবস্থিত
কুমিরা ঘাট বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা বাসস্ট্যান্ড নেমে এখানে যেতে হয়।
কুমিরা ঘাট কিভাবে যাবেন
কুমিরা ঘাট যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড। ঢাকা থেকে হানিফ, শ্যামলী, এস.আলম, সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক ইত্যাদি পরিবহন কোম্পানির বাস যায় চট্টগ্রাম। যে কোনো একটায় উঠে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটঘর নেমে যাবেন। ভাড়া নিবে নন এসি ৪৮০ টাকা, এসি ৮০০/১১০০ টাকা। তবে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনি সীতাকুণ্ডের কুমিরা নামবেন।
এছাড়া বাস বা ট্রেনে ফেনী এসে সেখান থেকে চট্টগ্রাম গামী লোকাল বাসে উঠে চলে আসবেন সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটঘর। ভাড়া ৫০/৮০ টাকা। সময় নিবে ১ ঘন্টা।
চট্টগ্রাম থেকেও আসতে পারেন কুমিরা ঘাটঘর। চট্টগ্রামের অলংকার মোড়, এ কে খান মোড়, কদমতলী থেকে ফেনী গামী বাসে আসতে পারেন কুমিরা ঘাটঘর। ভাড়া ৪০/৮০ টাকা। এছাড়া সিএনজি, প্রাইভেট কার রিজার্ভ করেও আসতে পারেন। সিএনজি ভাড়া ৩০০/৩৫০ টাকা।
কোথায় খাবেন
কুমিরা ঘাট এলাকায় খাবারের জন্য তেমন ব্যবস্থা নাই। তবে কিছু ভাতের হোটেল আছে। যেখানে ভাত, মাংস, মাছ, ভর্তা ভাজি দিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া চাইলে সীতাকুন্ড এসে খেতে পারেন। সীতাকুন্ডে মোটামোটি মানের কিছু রেস্টুরেন্ট আছে। তার মধ্যে সৌদিয়া, আপন, আল আমিন অন্যতম। পছন্দমতো যেকোন একটায় খেতে পারেন। তার মধ্যে আল আমিন রেস্টুরেন্ট এর খাবার সব থেকে ভাল মানের। অথবা চট্টগ্রাম এসেও খেতে পারেন। চট্টগ্রামে সব ধরণের রেস্টুরেন্ট আছে।
কোথায় থাকবেন
কুমিরা ঘাটে থাকার জন্য ভালো মনের হোটেল নাই। থ্রি ষ্টার নামে একটা হোটেল আছে। এখানে থাকতে পারেন। তবে তার আগে রুম দেখে নিবেন। এছাড়া সীতাকুণ্ডে এসে থাকতে পারেন। সীতাকুন্ডে মোটামোটি মানের বেশ কিছু হোটেল আছে। তার মধ্যে সাইমুন, সৌদিয়া অন্যতম। পছন্দমতো যেকোন একটায় থাকতে পারেন। অথবা চট্টগ্রাম এসেও থাকতে পারেন। চট্টগ্রামে সব ধরণের হোটেল আছে।
সীতাকুন্ডের দর্শনীয় স্থান
সীতাকুণ্ডে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। সব গুলো মোটামোটি কাছাকাছি হওয়াতে এক দিনে বেশ কয়েকটা কভার করা যায়। তবে এক রাত দুই দিন সময় নিয়ে আসলে প্রায় সব গুলো কভার করতে পারবেন। আপনার সময় বিবেচনা করে ট্যুর প্ল্যান সেভাবেই করবেন। সীতাকুণ্ডের জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট গুলো হলো:
- সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক
- চন্দ্রনাথ পাহাড়
- নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা
- নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
- কমলদহ ঝর্ণা
- ঝরঝরি ঝর্ণা
- বাঁশবাড়িয়া বীচ
- গুলিয়াখালি বীচ
- কুমিরা সন্দ্বীপ ফেরী ঘাট
সতর্কতা এবং টিপস
- অতিরিক্ত খাবার, খাবারের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের ফিল্টার, পানির বোতলসহ অন্যান্য আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলবেন না।
- কাঁধের ব্যাগ নিবেন। আর ব্যাগের ওজন যাতে কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।