লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান (Lawachara National Park) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। এই উদ্যান যে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অনন্য তাই নয়, দেশের সবকটি বনাঞ্চলের মধ্যে এটি সব থেকে নান্দনিক এবং আকর্ষনীয়। জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধতম বনগুলোর একটি। আকারে ছোট হলেও এটি দুর্লভ উদ্ভিদ এবং প্রানীর এক জীবন্ত সংগ্রহশালা।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কোথায় অবস্থিত
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে এর দুরুত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। এর আয়তন প্রায় ১২৫০ হেক্টর। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার এই বনকে ‘জাতীয় উদ্যান’ হিসেবে ঘোষণা করে। এখানে প্রায় ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। ১৯৫৫ সালে মাইকেল অ্যান্ডারসন নির্দেশিত হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র অ্যারাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ (Around the World in 80 Days) এর কিছু দৃশ্য এই উদ্যানে ধারণ করা হয়েছিলো।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান কিভাবে যাবেন
লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে। ঢাকা থেকে বাস এবং ট্রেনে আসা যায় শ্রীমঙ্গল। সায়দাবাদ, ফকিরাপুল থেকে হানিফ, শ্যামলী, এনা ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানীর এসি/নন এসি বাস আসে শ্রীমঙ্গল। ভাড়া ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা। সময় নিবে ৪ ঘন্টা। এছাড়া সিলেটগামী ট্রেনে আসা যায় শ্রীমঙ্গল। সময় নিবে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘন্টা। ভাড়া ২২০ থেকে ১০০০ থাকা।
শ্রীমঙ্গল পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি, প্রাইভেটকার, জীপ নিয়ে যেতে পারেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। যাওয়া আসা সিএনজি ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ থাকা।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকেট
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করার টিকেটের মূল্য বাংলাদেশী প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, ছাত্র এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। বিদেশীদের জন্য ৫০০ টাকা। গাড়ি পার্কিং ২৫ টাকা। গাইড নিলে গাইড ভাড়া ২০০ থেকে ৬০০ টাকা। গাইড অবশ্যই দরদাম করে নিবেন। তবে গাইড না হলেও চলে।
কোথায় খাবেন
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতরে বা আশে পাশে খাবারের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। খেতে চাইলে শ্রীমঙ্গল শহরে এসে খেতে হবে। সাথে কিছু হালকা খাবার আর পানি নিয়ে যেতে পারেন। এখানে সাত লেয়ারের চা পাওয়া যায়। শুধু মাত্র ছবি তুলার জন্য দলের সবাই মিলে এক কাপ কিনতে পারেন। কেননা খেতে খুবই জঘন্য।
কোথায় খাবেন
শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বেশি কিছু হোটেল এবং সুন্দর মনোরম রিসোর্ট রয়েছে। আরো আছে কটেজ এবং সরকারি গেস্ট হাউজ। আপনার চাহিদা এবং বাজেট অনুসারে যে কোনো একটায় থাকতে পারেন। তবে চা বাগান ঘেঁষা ইকো রিসোর্ট গুলো তে থাকতে পারলে বেশি ভালো লাগবে। আরো আছে ফাইভ স্টার হোটেল গ্রান্ড সুলতান।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।