ভারত ভ্রমণ কাহিনী

সড়ক পথে লেহ টু কার্গিল | কাশ্মীর ভ্রমণ -পর্ব ৩

Loading

লেহ টু কার্গিল

সমগ্র ভারতের সাথে লাদাখ সড়ক পথে কেবল দুই ভাবে কানেক্টেড। এক লেহ-মানালি হাইওয়ে আর এক শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ে। প্রচন্ড তুষারপাতের কারণে এই দুই সড়ক পথ প্রতি বছর ছয় মাস বন্ধ থাকে এবং লেহ সড়কপথে সমগ্র দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। এই পথ পৃথিবীর দুর্গম এবং সুন্দর সড়ক পথগুলোর মধ্যে একটি। আসুন জেনে নেই সড়ক পথে লেহ টু কার্গিল যাবার বিস্তারিত।

শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ে

ন্যাশনাল হাইওয়ে ১ (National Highway 1D) বা শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ে (Srinagar-Leh Highway) হচ্ছে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শ্রীনগর হতে লেহ শহরের সংযোগকারী জাতীয় সড়ক। এই সড়ক পথে তিনটি উঁচু উঁচু পাস ফোতুলা উচ্চতা ১৩,৪৭৮ ফিট , নামিকা উচ্চতা ১২,১৩৯ ফিট, জোজিলা উচ্চতা ১১,৫৭৫ ফিট বিদ্যমান।

সিন্ধু নদের পাশ দিয়ে, পাহাড় কেটে বানানো আঁকাবাঁকা এই সড়ক পথে কার্গিল, পৃথিবীর দ্বিতীয় শীতলতম স্থান দ্রাস, লামায়ুরু, মুনল্যান্ড ইত্যাদি স্থান পরে। এই সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৪২২ কিঃমিঃ এবং যেতে প্রায় ১০ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। কখনো কখনো আরো বেশি লাগে।

ভারতের সীমান্ত সড়ক সংস্থা এই সড়কের দেখাশোনা করে এবং তারা প্রায় প্রতিদিনই এর রক্ষণাবেক্ষনের কাজ করে। এই সড়ক জুনের শুরু থেকে নভেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত খোলা থাকে। বিদেশী ট্যুরিস্টরা সাধারণত এই পথ এড়িয়ে চলে। একজন বাংলাদেশী হিসাবে আমার অবশ্য সড়ক পথে লেহ টু কার্গিল যাবার সৌভাগ্য হয়েছিল।

লেহ টু কার্গিল

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮ লেহ। লাদাখে আজ আমাদের তৃতীয় দিন। কাল সারাদিন আমরা লেহ শহরে সাইট সিং করেছি। আজ আমরা লাদাখ ছেড়ে সড়ক পথে কাশ্মীর চলে যাব। লাদাখ টু কাশ্মীর খুবই লম্বা আর দু:সাহসিক এক জার্নি। তাই সাধারণত সবাই প্রথমে লেহ থেকে কার্গিল অথবা লেহ থেকে সোনমার্গ যায় এবং সেখানে রাত্রি যাপন করে সকালে আবার যাত্রা শুরু করে।

আমাদের প্ল্যান হচ্ছে আমরা প্রথমে লেহ থেকে কার্গিল যাব এবং সেখানে রাত্রি যাপন করব। পরে সকালে কাশ্মীরের সোনমার্গ চলে যাব। এই যাত্রাপথে আরো কিছু দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করব।

লেহ থেকে শ্রীনগর গাড়ি ভাড়া

লেহ থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া প্রায় ১৩,০০০-১৫,০০০ রুপি। তবে যে গাড়িগুলো শ্রীনগর থেকে এসেছে তারা ফেরার পথে কমে যাত্রী নিয়ে যায়। চেষ্টা করবেন এমন টাইপের গাড়ি ভাড়া করার জন্য। ভুলেও ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি ভাড়া করতে যাবেন না। তাহলে বেশি পরবে। সব থেকে ভাল হয় হোটেলের ম্যানেজার কে বললে।

ওনাদের অনেক চ্যানেল থাকে আর কমে পাওয়া যায়। অবশ্য এজন্য তারা গাড়ির ড্রাইভারের কাছ থেকে কমিশন নেয়। আমরা লেহ থেকে সোনমার্গ পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া করলাম ১২,০০০ রুপি দিয়ে। এখানে ১০,০০০ গাড়ি ভাড়া আর ২,০০০ ম্যানেজারের কমিশন। লেহ থেকে কার্গিল পর্যন্ত ভাড়া ৭,০০০ – ৮,০০০ রুপি। আমাদের গাড়ি টয়োটা ইনোভা ৬ জনের জন্য পার্ফেক্ট।

অপূর্ব সুন্দর লেহ-শ্রীনগর হাইওয়ে

সকালে নাস্তা করে আমরা লেহ-শ্রীনগর হাইওয়ে ধরে এগিয়ে চলা শুরু করলাম। ইনোভা গাড়িটি বেশ ভাল। আমাদের ড্রাইভার মুদাস্সের, কাশ্মীরি লোক, বাসা শ্রীনগরে ডাল লেকের পারে। উনি কাল শ্রীনগর থেকে ট্রিপ নিয়ে এসেছেন, আজ ফেরার পথে আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন।

ও ভাল কথা এখানে কাশ্মীর আর লাদাখের লোকদের মাঝে প্রচন্ড ক্লেশ বিদ্যমান। একে পক্ষ অন্য পক্ষকে সব সময় দোষারুপ করে, আর তারা অন্যদের থেকে ভালো এটা বুঝাবার চেষ্টা করে। অপর দিকে লেহ এবং কার্গিল লাদাখে হলেও তাদের মাঝেও ক্লেশ বিদ্যমান। লেহ এর লোকেরা তিব্বতি হলেও সাধারণত চীনকে অপছন্দ করে এবং মূল ভারতকে সাপোর্ট করে।

অপর পক্ষে কার্গিল, শ্রীনগর এর লোকেরা পাকিস্তান কে সাপোর্ট করে, মূল ভারতকে এরা মোটেও পছন্দ করেনা। এমন কি ভারত পাকিস্তান ম্যাচ হলে তারা পাকিস্তানকেই সাপোর্ট করে। দুই পক্ষই চায় স্বায়ত্ত শাসন। তবে এরা বাংলাদেশ কে খুব পছন্দ করে। তাই সব কিছু মাথায় রেখে নিউট্রাল থাকার চেষ্টা করবেন।

পথেই পড়ল ম্যাগনেটিক হিল, গুরুদুয়ারা পাথর সাহেব, সঙ্গম পয়েন্ট। আগের দিন এগুলা দেখায় আজ আর নামলাম না। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে। আমরা শুধু চোখ দিয়ে আশে পাশের অপূর্ব দৃশ্য দেখছি আর মোবাইলে তার ছবি, ভিডিও ধারণ করছি।

লেহ টু কার্গিল পথের দৃশ্য

রাস্তার দুই পাশে বিশাল বিশাল পাহাড়। কখনো আমরা অনেক নিচে নেমে যাচ্ছি আবার পাহাড়ের চূড়ায় উঠে যাচ্ছি। তবে রাস্তাগুলো ভুটানের মতো এতো প্যাঁচানো না। পাহাড় গুলোতে তেমন কোনো গাছপালা নাই। তবুও কত সুন্দর আর কালারফুল।

কিছু পাহাড় কালো, কিছু বাদামি, কিছু আবার হলুদ, কিছু হালকা লাল, কিছু ধূসর। কারো মাথায় সাদা সাদা বরফ। এক কথায় চমৎকার। এতদিন শুধু সবুজ বা আরবের লালচে পাহাড় দেখেছি। কিন্তু এমন অদ্ভুত কালার কম্বিনেশন আগে কখনো দেখি নাই। লাদাখের এই মরুভূমিতে গাছপালা ছাড়া পাহাড় এতো সুন্দর হলো কিভাবে?

কখনো কখনো রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী। একটু পর পর পাহাড় বেয়ে বরফ গলা পানি গড়িয়ে পড়ছে। আশপাশ একদম ফাঁকা কোথাও লোকজন নাই। এমন জনবিরল জায়গা হলেও দিন বা রাত কোনো সময়ই চুরি ডাকাতির নাকি কোনো সম্ভবনা নাই। এমনটাই জানালো মুদাস্সের ভাই।

পথে আমরা খালসি নামক স্থানে যাত্রাবিরতি করে লাঞ্চ করে নেই। এখানে বেশ কিছু পাঞ্জাবি ধাবা রয়েছে। এখানকার এপ্রিকট খুবই উন্নতমানের এবং দামেও সস্তা। আমরা প্রতি কেজি ২০০ রুপি করে বাসার জন্য ২-১ কেজি করে এপ্রিকট কিনে নেই। কাশ্মীরে সবখানেই এপ্রিকট পাওয়া যায়। তবে এখানেই সব থেকে ভালো মানের এপ্রিকট হয়। তাই কিনতে চাইলে এখান থেকেই নিবেন।

লেহ টু কার্গিল
খালসি, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮ বিকাল ০৪:০০

লাদাখে বাইক চালানো

মাঝে মাজে চোখে পড়ছে রয়েল এন্ড ফিল্ড ব্রান্ডের বেশি সিসির বাইক নিয়ে অনেকে দল বেঁধে সাই সাই করে চলে যাচ্ছে। লাদাখে বাইক চালানো সব থেকে মজাদার। অনেকে এজন্যই লাদাখে আসে। এখানে ভাড়ায় বাইক পাওয়া যায়। ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে ১০০০ – ১২০০ রুপিতে সারাদিনের জন্য বাইক ভাড়া পাওয়া যায়। ফুয়েল খরচ নিজের। অনেকেই লেহ থেকে বাইক নিয়ে শ্রীনগর চলে যায় বা শ্রীনগর থেকে লেহ আসে। দুই জায়গাতেই তাদের লোক থাকে। সেখানে জমা দিলেই কাজ শেষ। এখানে পেট্রোল পাম্প অনেক দূরে দূরে। তাই গেলোনে করে আলাদা পেট্রোল সাথে নিয়ে নিতে হয়। ড্রাইভিং না জানায় আমার এ শখ এবার আর পূরণ হলোনা।

ফটুলা পাস

ফটুলা পাস (Fotu la pass or Foto la pass) লেহ-শ্রীনগর হাইওয়ের সব থেকে উঁচু পাস বা স্থান। এর উচ্চতা প্রায় ১৩,৪৭৮ ফিট। এটি লেহ শহর থেকে প্রায় ১০০ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। ফটুলা পাসের রাস্তা বেশ ভালো এবং এখানে গাড়ি চালাতে তেমন সমস্যা হয় না। এই পাসের উপর দিয়ে গাড়ি চালানো খুবই আনন্দদায়ক। এখানে আর্মিদের ছোট এক ক্যাম্প রয়েছে। সম্ভবত সিগনালিং এর কাজ করা হয়। এখানে AMS এর সমস্যা হতে পারে। তাই বেশি করে পানি খাবেন।

মুন ল্যান্ড

লামায়ুরু গ্রামের ল্যান্ডস্কেপ অনেকটাই দেখতে চাঁদের মাটির মতো। তাই ট্যুরিস্টরা একে মুনলান্ড (Moonland) বলে। এখানকার মাটি পৃথিবীর সাধারণ মাটি বা পাথর থেকে আলাদা। লেহ-শ্রীনগর হাইওয়ে ধরে এগিয়ে গেলে ফটুলা পাসের পরেই মুনলান্ড। মুনলান্ড লেহ শহর থেকে প্রায় ১১২ কিঃমিঃ এবং কার্গিল শহর থেকে প্রায় ১০৬ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত।

আমরা গাড়ি থেকে নেমে এখানে কিছুক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। মুনলান্ড দেখতে আসলেই অদ্ভুত। এমন জায়গা আগে দেখি নাই কোথাও। দেখতে সুন্দর হলেও মাঝে মাঝে ভয় লাগে। ল্যান্ডস্ক্যাপ ফটোগ্রাফার দের জন্য মুনলান্ড আদর্শ স্থান।

তবে মুনলান্ড এর বেস্ট ভিউ পেতে হলে আপনাকে হালকা ট্রেকিং করে লামায়ুরু গুমপার পাশে মেডিটেশন হিলের উপর উঠতে হবে। সেখান থেকেই পুরা মুনলান্ড এর সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। এখানে সালমান খানের রেস্ ৩ মুভির শুটিং হয়েছে। আমাদের দেশের এক শিল্পীও তার গানের মিউজিক ভিডিও এখানে শুট করেছে।

লামায়ুরু মনাস্ট্রি

লামায়ুরু মনাস্ট্রি (Lamayuru Monastery) লেহ জেলার লামায়ুরু গ্রামে অবস্থিত। এটি লেহ শহর থেকে প্রায় ১১৫ কিঃমিঃ দূরে লেহ-শ্রীনগর হাইওয়েতে অবস্থিত। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১১,৫২০ ফিট। এটি লাদাখের সব থেকে বড় এবং প্রাচীন মনাস্ট্রি। মেডিটেশন হিল থেকে পুরা লামায়ুরু গ্রামের সব থেকে ভালো ভিউ পাওয়া যায়। আমরা এখানে কিছু সময় পার করি এবং ছবি তুলি।

কার্গিল শহর

এর পর আমরা চলে আসি সেই বিখ্যাত কার্গিল শহরে। এটি লাদাকের কার্গিল জেলায় অবস্থিত এবং লাদাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। কার্গিল লেহ থেকে প্রায় ২৩৪ কিঃমিঃ, শ্রীনগর থেকে ২০৪ এবং দ্রাস থেকে ৬০ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত।

এই জেলাতেই ১৯৯৯ সালে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে এক যুদ্ধ হয় যা কার্গিল ওয়ার নাম পরিচিত। আজ রাতে আমরা এখানেই থাকব। আমরা এক হোটেলে রুম নিয়ে নিলাম। প্রতি রুমের ভাড়া ১১০০ রুপি। ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে চলে গেলাম।

মুদাস্সের ভাই আমাদের এক মুসলিম রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে গেল। আমরা মুরগিরমাংস, ভাত, সবজি খেলাম। এরা ঘন এবং বেশি করে ঝোল দিয়ে মাংস রান্না করেছে। খেতে দারুন লাগল। তিন দিন পর আজ তৃপ্তি করে খেলাম। কাশ্মীরের লোকেরা সব খাবারই ঝোল করে রান্না করে। আপনারা ড্রাইভার কে বলবেন আপনার বাজেট অনুসারে রুম ঠিক করে দিতে। নাহলে রাতের বেলায় ঘুরতে ঘুরতে শেষ।

লেহ টু কার্গিল ভ্রমণ শেষে

খাবার খেয়ে আমরা রুমে চলে আসি। এসে ওয়াইফাই কানেক্ট করে বাসার সবার সাথে কথা বলে নেই। আমি অবশ্য সেভ করতে চেয়েছিলাম। কয়েকদিনের ধকলে চেহারার অবস্থা করুন। কিন্তু এখানে সব কিছুই রাত ৮ টার ভিতর বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের হোটেল সুরু নদীর পারেই। সুরু সিন্ধুর এক শাখা নদী। এই পাহাড়ি নদীতে প্রচন্ড স্রোত। রাতে স্রোতের শব্দ রুম থেকে ভয়ঙ্কর লাগছিল। কার্গিলেও প্রচন্ড ঠান্ডা আর বাতাস। তাই তাড়াতাড়ি বিছানায় চলে যাই।

টিভিতে কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে অনেক মুভি দেখেছি। আমার হোটেল থেকে সামান্য কিছু দূরেই যুদ্ধ ক্ষেত্র। বিছানায় শুয়ে শুয়ে যুদ্ধের ভয়াবহতা আর নিজের বর্তমান লোকেশন চিন্তা করে কেমন জানি লাগছিলো। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমানোর চেষ্টা করি। কাল সকালে আমরা কার্গিল থেকে সোনমার্গ যাব।

অন্য পর্ব গুলোও দেখে নিতে পারেন। আশাকরি ভালো লাগবে:

সময়ে নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আশা করি খুব উপভোগ করেছেন। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্টস করে জানালে ভালো হয়। আর ভালো লেগে থাকলে ওয়ালে শেয়ার করে বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিন।

5 4 ভোট
রেটিং

লেখক

Rashedul Alam; Rasadul Alam; founder of cybarlab.com; founder of trippainter.com; trippainter.com; cybarlab.com; Bangladeshi travel blogger; Bangladeshi blogger; Bangladeshi software engineer

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
1 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

1
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx