বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী (Maheshkhali Island)। এটি কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা। বাংলাদেশে অনেকগুলো দীপ থাকলেও এখানেই আসলেই কেবল দেখা মিলবে উঁচু উঁচু কিছু পাহাড়ের। পাহাড়, সমুদ্র, নীল পানি, সবুজ অরণ্য এক কোথায় চমৎকার।
মহেশখালী এর ইতিহাস
মহেশখালী একসময় মূল ভূখণ্ড কক্সবাজারের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। ১৫৬৯ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এই দ্বীপের সৃষ্টি হয়। পূর্ব প্রান্ত দিয়ে উত্তর দক্ষিণমুখী পাহাড় এবং তার পাদদেশে প্রবাহিত চ্যানেল এই ধারণাকে আরো জোরালো করে।
কীভাবে যাবেন মহেশখালী
মহেশখালী যাওয়ার দুটি পথ আছে। একটিতে আপনাকে আসতে হবে কক্সবাজার শহরে। ঢাকা থেকে বাস, প্লেন, ট্রেন ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে কক্সবাজার আসা যায়। কক্সবাজার শহর থেকে অটোতে ৬ নং জেটি বা কস্তুরা ঘাট। ভাড়া নিবে ৩০-৪০ টাকা। সেখান থেকে স্পিডবোট বা ট্রলারে মহেশখালী।
স্পিডবোটে ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা। সময় লাগবে ২০-২৫ মিনিট। লোকজন বেশি হলে রিজার্ভ করে নিতে পারেন। ভাড়া নিবে ৯০০-১০০০ টাকা। আর ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলারে ভাড়া ৭০-৮০ টাকা। সময় নিবে ১ ঘণ্টার মতো। হাতে সময় থাকলে ট্রলারে যেতে পারেন। অনেক মজা পাবেন। তা না হলে যাবার সময় স্পিডবোটে আসার সময় ট্রলারে আসতে পারেন।
অন্য পথে চকরিয়া এসে বদরখালী হয়ে মহেশখালী আসতে পারেন। এই পথে এখন ব্রীজ হয়েছে। তাই গাড়ি নিয়ে আসা যায়। তবে মহেশখালী যাবার সব থেকে ভালো উপায় হলো প্রথমটি।
কি দেখবেন মহেশখালীতে
মহেশখালীর মূল আকর্ষণ কক্সবাজার থেকে স্পিডবোট বা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যাবার পথে আশেপাশের সৌন্দর্য। স্বচ্ছ নীল পানি আর আকাশ, পানিতে ভাসমান জঙ্গল মিলে এক অন্যরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। অন্য কোথাও গেলে এমন দৃশ্য হয়তো দেখতে পাবেন না। এখানে দুইটি জেটি রয়েছে। দুইটি জেটিই সুন্দর।
তবে দ্বিতীয় জেটি অসাধারণ। পুরা সবুজ জঙ্গলের মাঝে লম্বা রাস্তা। এখানকার ভিউ অসাধারণ। আরো রয়েছে আদিনাথ মন্দির, দক্ষিণে বিস্তীর্ণ সাগর, পশ্চিমে বিশাল বিশাল পাহাড়, শুটকি পল্লী, লবন সংগ্রহের পুকুর, রাখাইন পাড়া, পানের বরজ, চিংড়ি ঘের, চরপাড়া সৈকত, সোনাদিয়া দ্বীপ ইত্যাদি। তবে সোনাদিয়া দ্বীপ যেতে হলে আপনাকে হাজার পনেরশ টাকা খরচ করে স্পিডবোট ভাড়া নিতে হবে।
মহেশখালী পৌঁছালে ইজি বাইক চালকেরা ৮/১০ স্পট বলে বিভ্রান্ত করবে, অনেক টাকা ভাড়া চাবে। আসলে সব স্পট যাবার পথেই পরে। বলবেন এই জেটি থেকে যাত্রা করে অন্য জেটিতে যাবো। মাঝখানে মন্দিরে কিছু সময় কাটাবো। অথবা দ্বিতীয় জেটি থেকে পায়ে হেঁটে মন্দির পর্যন্ত গিয়ে, মন্দির এবং পাহাড় দেখে নেমে ইজিবাইক ভাড়া করতে পারেন। পাহাড়ের উপরেই মন্দির।
কোথায় থাকবেন
মহেশখালীতে থাকার তেমন ভালো কোনো ব্যবস্থা নাই। তাই ঘুরে কক্সবাজার চলে আসলেই ভালো। কক্সবাজারে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। দরদাম করে একটি বেছে নিবেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।