পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ কাহিনী

আমার পিরামিড অভিযান

Loading

পিরামিড

আসুন শুনি আমার পিরামিড অভিযান। ছোট বেলা থেকেই আমরা মিশরের পিরামিডের কথা শুনে আসছি। ২০১৮ সালে আমার মিশর যাওয়া অনেকটা হটাৎ করেই হয়ে যায়। ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্স এর ফ্লাইটে দুবাই হয়ে মিশরের কায়রো বিমান বন্দরে যেতে সব মিলে ১০ ঘণ্টার মত সময় লাগে।

গিজার গ্রেট পিরামিড

গিজার গ্রেট পিরামিড “খুফুর পিরামিড” বা “চিপসের পিরামিড” নামে পরিচিত। এটি মিশরের পিরামিড কমপ্লেক্সের ৩ টি পিরামিডের মধ্যে প্রাচীন এবং বৃহত্তম। এটি বিশ্বের সপ্ত আশ্চর্যের প্রাচীনতম। এটি প্রায় কুড়ি বছর সময় ধরে নির্মিত হয়েছিল। এর উচ্চতা প্রায় ১৪৬.৫ মিটার (৪৮১ ফুট)। গ্রেট প্যারামিড ১৩১১ খ্রিস্টাব্দে লিংকন ক্যাথিড্রালটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে লম্বা মনুষ্যনির্মিত কাঠামো ছিল। মূলত এটি চুনাপাথর ও বিশাল বিশাল পাথরের ব্লক দ্বারা নির্মাণ করা হয়। এর ভিতরে তিনটি চেম্বার আছে।

পিরামিড অভিযান

অনেকটা স্বপ্নের মত মনে হয়েছিল যখন প্রথম বারের মত পিরামিড দেখি। মিশরে ৩টি বড় পিরামিডের পাশাপাশি অনেক গুলো ছোট ছোট পিরামিড আছে। এছাড়াও অসংখ্য টম্ব(মাটির নীচে ছোট ছোট ঘর) ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যেখানে ফারাও সময়ের গণ্য মান্য বাক্তি তথা- মন্ত্রি, সেনাপতি, রাজপুত্র ইত্যাদি লোকের দেহ মমি করে রাখা আছে। আগে শুনেছিলাম ৩ টি পিরামিডের ভিতরেই যাওয়া যায় কিন্তু। বাস্তবে দেখা গেল একটি পিরামিডের (গিজার গ্রেট পিরামিড) ভিতরে যাবার বাবস্থা রয়েছে। তবে ছোট ছোট টম্ব গুলোতে যাওয়া যায়।

পিরামিড অভিযান

পিরামিডের ভিতরে যাবার জন্য প্রায় ২০ ডলার দিয়ে আলাদা টিকেট কিনে নিতে হয়। মনে রাখবেন, ভিতরে যাবার পথ অনেক সরু এবং সেখানে অক্সিজেনের সল্পতা রয়েছে। কুজা হয়ে খুব সরু পথ দিয়ে উপরে উঠতে হবে, পাশা-পাশি যাবার উপায় নাই। কেউ অসুস্থ হয়ে পরলে নিচে নামানোর কোনো উপায় নাই।

পিরামিডে ঢুকার রাস্তা প্রথমে কিছুটা প্রসস্ত হলেও পরে বেশ সরু এবং কুজো হয়ে উপরে উঠতে হয়। এই সময় উপর উঠা অনেক কঠিন। রাস্তা এখানে এত সরু যে পাশা পাশি যাওয়া বা আসা সম্ভব না। আমরা একটা টীম গিয়েছিলাম। অনেকে টিকেট কাটলেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ২/৩ জন পিরামিডের একদম উপরে মমি রাখার কক্ষে যেতে পেরেছিলাম।

কিছুটা উঠার পর আমার একসময় মনে হতে লাগলো যে আর নিশ্বাস নিতে পারছি না। তবে আমাকে উঠতে হবে, এটা ছিল আমার বিশ্বাস। তখন প্রায় ৫/১০ মিনিট সেখানে বসে ছিলাম, যেন এই নিশ্বাস নিতে না পারার কথাটা ভুলে যেতে পারি। একসময় ভুলেও গেলাম। একটু পর আবার উঠতে শুরু করলাম। ভিতরে সম্ভবত একেকটি ঘরে একেকটি মমি রাখা হতো। সবচেয়ে উপরে রাখা ঘরটি সম্রাট ফুফূ এর।

4.8 9 ভোট
রেটিং

লেখক

ধ্রব আহমদ
Subscribe
Notify of
7 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

7
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx