শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ (Shahid Buddijibi Sriti Shoudho) বা শহীদ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ বা রায়ের বাজার বধ্যভূমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতি স্মারক। এটি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকায় অবস্থিত। এর স্থপতি হচ্ছেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং মোঃ জামে আল শফি। এর উচ্চতা ৫৮ ফুট। ১৯৯৬ – ১৯৯৯ এই সময়ে এটি নির্মাণ করা হয়।
পরিত্যক্ত ইটের ভাটার এ বধ্যভূমি থেকে আজো ভেসে আসে আমাদের অধিকার আদায়ের সেই দিন গুলির প্রতিধ্বনি। বধ্যভূমির বাঁ দিকের প্রধান গেট দিয়ে প্রবেশ করে পাশের দেয়ালের গায়ে লেখাগুলো পড়ার মধ্য দিয়ে মনে পরবে ৭১ এর সেই দিনগুলোর কথা।
প্রায় সাড়ে তিন একর জায়গার ওপর স্থাপিত স্মৃতিসৌধের মূল বেদিটি মাটি থেকে প্রায় আড়াই মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এর প্রধান প্রবেশ পথে রয়েছে একটি বটগাছ। বটগাছটি আদি বটগাছের প্রতিকী রূপ। সেই সময় বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে বটগাছের নিচে প্রথমে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হত, পরে ইটের ভাটায় নিয়ে হত্যা করা হত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময়টাতেই পাকিস্তানী সৈন্যরা এবং তাদের স্থানীয় দোসররা এদেশের শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, কবি ও লেখকদের হত্যা করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুই দিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ সংখ্যক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
বুদ্ধিজীবীদের ঢাকায় একএিত করে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগ এবং শহরের বিভিন্ন স্থানের নির্যাতন সেলে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের রায়েরবাজার এবং মিরপুরে এনে মেরে ফেলে রাখা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে বাংলাদেশে পালন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ কিভাবে যাবেন
ছুটির দিনে ঘুরতে কার না ভাল লাগে। আর ঘুরতে ঘুরতে যদি কিছু জানা যায় তবে কিন্তু মন্দ হয় না। আসছে ছুটির দিনে তাই ঘুরে আসতে পারেন রায়ের বাজারের বধ্যভূমি থেকে। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে সরাসরি ঢাকার মোহাম্মদপুর অথবা ফার্মগেইট চলে আসুন। মোহাম্মদপুর থেকে রিক্সা করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ যাওয়া যায়। ভাড়া নিবে ৪০-৫০ টাকা।
ফার্মগেইট থেকে যেতে চাইলে ফার্মগেইট-মোহাম্মদপুর বেশ কিছু বাস সার্ভিস আছে সেগুলো করে মোহাম্মদপুর চলে আসুন। এছাড়া ফার্মগেট থেকে টেম্পু চলে, চাইলে ওটাও ব্যবহার করতে পারেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা। মোহাম্মদপুর থেকে রিক্সা করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।
বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানাতে ছুটির দিনে এখানে অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসে। অনেকের কাছে এই স্মৃতিসৌধ সপ্তাহের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে।
এর আসে পাশে বেশ কিছু খোলা জায়গা আছে। সেখানে বসে সময় কাটানো খুবই উপভোগ্য হতে পারে। তবে যথাযথ পরিচর্যার অভাবে প্রতিদিনই এর সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।