সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল (Sadarghat Launch Terminal) বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা দেশের এক প্রাচীন এবং বড় নদী বন্দর তথা লঞ্চ টার্মিনাল। এই টার্মিনাল দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা শহরের জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্রমবিকাশ এবং সুখ্যাতির পিছনে এই টার্মিনালের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
কোথায় অবস্থিত
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা লঞ্চ ঘাট বাংলাদেশের ঢাকা জেলার পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে এর অবস্থান। এই ঘাটের অপর পারে কেরানীগঞ্জ।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের গুরুত্ব
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের গুরুত্ব অপরিসীম। এই টার্মিনাল ব্যবহার করেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট ৪৫ টি রুটে নৌযান চলাচল করে। এখান থেকে দক্ষিণ অঞ্চলের জেলা গুলো যেমন: ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী, মাদারীপুর, চাঁদপুর, খুলনা, হাতিয়া, বাগেরহাট প্রভৃতি গন্তব্যে লঞ্চ ও স্টিমার ছেড়ে যায়। এসব নৌযান মানুষের পাশাপাশি মাছ, সবজি, ফলমূল ইত্যাদি নানা পণ্য পরিবহন করে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাওয়া এলাকায় পদ্মা নদীর উপর পদ্মা সেতু চালু হবার পরে এই টার্মিনালের আগের সেই জৌলুস অনেকটা কমে গেছে। বাসে পদ্মা সেতু দিয়ে মানুষ এখন অল্প সময়ে গন্তব্যে চলে যেতে পারছে। তাই লঞ্চ গুলো আশানুরূপ যাত্রী পাচ্ছেনা। সেকারণে অনেক লঞ্চ মালিক ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। অনেক রুটে প্রতিদিন এখন কম পরিমানে লঞ্চ চলাচল করছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে কি কি দেখা যায়।
এই টার্মিনালে বিভিন্ন ধরণের লঞ্চ আছে। অনেক গুলো আকারে খুবই বড়। সেগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। লঞ্চের ভিতরে প্রবেশ করতে টাকা লাগেনা। এই টার্মিনাল পুরানো ঢাকায় অবস্থিত হবার কারণে, এখানে আসলে পুরান ঢাকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলো ভ্রমণের সাথে সাথে পুরান ঢাকার নানা ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারেন। সদরঘাট টার্মিনালের কাছে উল্লেখ যোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো হলো: আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা, বড় কাটরা, ছোট কাটরা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বলধা গার্ডেন ইত্যাদি। সব গুলো স্থান খুবই কাছাকাছি। হেটে বা রিক্সা নিয়ে যেতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বিভিন্ন ভাবে যাওয়া যায়। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাস, রিক্সা, লেগুনা, ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে যেতে পারেন সদরঘাট। বাস ভাড়া ১০ টাকা। বাসগুলোই বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে নামিয়ে দিবে। সেখান থেকে পায়ে হেটে চলে যাবেন লঞ্চ টার্মিনাল। টার্মিনালে প্রবেশ করতে ১০ টাকার টিকেট কাটা লাগবে। তবে শাহী ভাব নিতে চাইলে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।