বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণের ট্যুর প্ল্যান

সাজেক ট্যুর প্ল্যান

Loading

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
napittochara-trail-3
সেনাবাহিনীর এসকোর্ট
napittochara-trail-3
কংলক পাহাড়
napittochara-trail-3
সাজেকের ভিউ
Shadow

সাজেক বাংলাদেশের এক অনন্য সুন্দর জায়গা। সবুজ পাহাড় আর সাদা মেঘ এক সাথে দেখতে হলে চলে আসুন সাজেক। দেশের যেকোনো জায়গায় থেকে এখানকার প্রকৃতি একটু আলাদা। সাজেকে এই গরম, আবার এই ঠান্ডা। আসুন দেখে নেই সাজেক ট্যুর প্ল্যান (Sajek Tour Plan), যা আপনার ভ্রমণকে সুন্দর এবং আরামদায়ক করবে।

সাজেক কিভাবে যাবেন

সাজেক ভ্যালি যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে খাগড়াছড়ি জেলায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ভাবে সাজেক আসা যায়। ঢাকা থেকে শ্যামলী, গ্রিনলাইন, হানিফ, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন, এস আলম, বিআরটিসি ইত্যাদি পরিবহন কোম্পানির এসি/নন এসি বাস খাগড়াছড়ি আসে। নন এসি বাস ভাড়া ৭৫০। তবে শান্তি পরিবহন দিঘীনালা পর্যন্ত আসে, ভাড়া ৭৮০ টাকা।

দিঘীনালা থেকে বাঘাইহাট হয়ে সাজেক যেতে হয়। বাঘাইহাট আর্মি এবং পুলিশ ক্যাম্প থেকে অনুমতি নেয়া লাগে। এটি নেয়া বাধ্যতামূলক। পথে পরবে কাসালং ব্রিজ, টাইগার টিলা আর্মি ক্যাম্প, মাসালং বাজার। বাজার পার হলেই পরবে সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া। এই গ্রামের উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। রুইলুই পাড়া থেকে অল্প সময়ে পৌঁছে যাবেন সাজেক।

খাগড়াছড়ি শহর অথবা দিঘীনালা থেকে লোকাল চান্দের গাড়ি/জীপগাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। এই গাড়ি রিজার্ভ করে সাজেক যাওয়া যায়। এক গাড়িতে ১০/১২ বসা যায়। একদিনে সাজেক ঘুরে চলে আসলে গাড়ি ভাড়া ৫,৪০০ টাকা। এক রাত থেকে পরের দিন আসলে গাড়ি ভাড়া ৭,৭০০ টাকা। দুই রাত থাকলে গাড়ি ভাড়া ১০,০০০ থেকে ১৩,০০০ টাকা।

দিঘীনালা থেকে সিএনজি দিয়েও সাজেক যাওয়া যায়। ভাড়া ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা। তবে সিএনজি দিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তা বেশ ঢালু, তাই উল্টে যাবার সম্ভবনা আছে। এছাড়া কম টাকায় যেতে চাইলে প্রথমে খাগড়াছড়ি শহর থেকে বাসে দিঘীনালা, ভাড়া ৫০ টাকা। দিঘীনালা থেকে মোটরসাইকেলে সাজেক, ভাড়া ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। তবে ফেরার পথে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প সন্ধ্যার আগেই পার হতে হবে। তা নাহলে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন।

কোথায় থাকবেন

সাজেকে থাকার জন্য বেশ কিছু রিসোর্ট এবং আদিবাসীদের কটেজ আছে। প্রতি রাতের জন্য ভাড়া ২০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা। ছুটির দিন গুলোতে ভিড় একটু বেশি থাকে। তাই ভালো রিসোর্ট পেতে চাইলে এক মাস আগে থেকে বুকিং দিয়ে গেলে ভালো।

এছাড়া কম খরচে আদিবাসীদের কটেজে থাকা যায়। এখানের সব রিসোর্ট, কটেজ থেকেই মোটামোটি সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। আগের থেকে রিসোর্ট, কটেজ এর সংখ্যা বাড়ায় এখন আগের মতো আর থাকার জায়গা নিয়ে সমস্যা হয় না। আরো পড়তে পারেন সাজেকের সকল রিসোর্ট এবং কটেজ এর তথ্য।

কোথায় খাবেন

সাজেকে এখন বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট আছে। তাদের মধ্যে চিম্বাল রেস্টুরেন্ট, ফুডানকি রেস্টুরেন্ট, মারুতি দিদির রেস্টুরেন্ট, কাশবন রেস্টুরেন্ট, মনটানার রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এদের খাবার বেশ ভাল। এখানে ডাল, ভাত, সবজি দেশী মুরগী প্যাকেজ খাবার পাওয়া যায়। খরচ হবে ২০০/২৫০ টাকা। এছাড়া অনেক রিসোর্ট, কটেজেই খাবারের ব্যবস্থা আছে। আগে থেকে বলে রাখলে পছন্দ মতো খাবার রান্না করে দিবে।

সাজেক ট্যুর প্ল্যান

সাজেক ভালো ভাবে উপভোগ করার জন্য ৪ রাত ৩ দিন প্রয়োজন। তবে হাতে সময় কম থাকলে তিন রাত দুই দিনেও সাজেক কভার করা যায়। ৩ রাত ২ দিনের সাজেক ট্যুর প্ল্যান মোটামোটি এইরকম:

প্রথম দিন:

রাতের বাসে রওনা দিয়ে সকালে খাগড়াছড়ি পৌঁছাবেন। নাস্তা করে চান্দের গাড়ি/জিপ দিয়ে সাজেক চলে আসবেন। পছন্দমত রিসোর্ট বা কটেজে চেকইন করে হালকা বিশ্রাম করে নিবেন। রিসোর্টে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা না থাকলে বাহিরের রেস্টুরেন্ট এ খাবার খেয়ে নিবেন।

হালকা বিশ্রাম করে বিকালের দিকে চলে যাবেন হ্যালি প্যাড এ। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকে রুমে ফিরে আসবেন। রাতে বার বি কিউ করতে পারেন। কটেজে এই সুবিধা না থাকলে রেস্টুরেন্টে ও খেতে পারেন। রাতে সাজেকের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে ভীষণ মজা। আর বর্ষাকালে গেলে তো মনে হবে মেঘের ভিতর দিয়ে হেটে বেড়াচ্ছেন। হ্যালি প্যাড এর দিকে যেতে পারেন। সব শেষে রুমে ফিরে ঘুমিয়ে পড়বেন।

দ্বিতীয় দিন:

সূর্যোদয় এর অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। দরকার হলে এলার্ম সেট করে রাখতে পারেন। এইসময় সাজেকের পরিবেশ দারুন সুন্দর লাগে। সূর্যোদয় এর পর চলে যাবেন কংলক পাহাড়। হেটে যেতে পারেন। অথবা চান্দের গাড়ির ড্রাইভারকে বলে রাখতে পারেন। এখন গাড়ি নিয়ে কংলক পাহাড়ের অনেকটা উপরে উঠা যায়।

সকালের দিকেই সাজেকে বেশি মেঘ দেখা যায়। আর কংলক পাহাড়ে এর পরিমান থাকে বেশি। সেনাবাহিনীর এসকোর্ট সকাল ১০ টায় শুরু হয়। তাই এর আগেই রুমে ফিরে আসুন। ব্যাগ ঘুছিয়ে চেকআউট করে নাস্তা করে নিবেন। এসকোর্ট শুরু হলে রওনা দিয়ে খাগড়াছড়ি শহরে চলে আসবেন। দুপুরের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন খাগড়াছড়ি।

শহরে দুপুরের খাবার খেয়ে বাস কাউন্টারে ব্যাগ রেখে খাগড়াছড়ি শহরের আসে পাশে ঘুরে দেখতে পারেন। চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করার সময় এই ব্যাপারে বলে নিবেন। শহরের আসে পাশে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। অবশেষে রাতের খাবার খেয়ে বাসে উঠে পড়ুন। সব ঠিক থাকলে সকালের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্যে।

5 4 ভোট
রেটিং

লেখক

Rashedul Alam; Rasadul Alam; founder of cybarlab.com; founder of trippainter.com; trippainter.com; cybarlab.com; Bangladeshi travel blogger; Bangladeshi blogger; Bangladeshi software engineer

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
6 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

6
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx