ময়মনসিংহ বিভাগের দর্শনীয় স্থান

শশী লজ, ময়মনসিংহ

Loading

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল
napittochara-trail-3
শশী লজ
napittochara-trail-3
শশী লজ
napittochara-trail-3
শশী লজ
Shadow

ব্রিটিশ ভারতে পূর্ব-বাংলার সবচেয়ে ধনাঢ্য জমিদারের এক অমর কীর্তি শশী লজ বা শশীলজ (Shoshi Lodge)। বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী টিভি নাটক অয়োময় এর শুটিং হয়েছিল এই শশী লজে। এই রাজবাড়ি ময়মনসিংহ রাজবাড়ি নামেও পরিচিত।

শশী লজ কোথায় অবস্থিত

শশী লজ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলা সদরে অবস্থিত। ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রস্থলে, ব্রহ্মপুত্র নদের কাছেই এই রাজবাড়ী অবস্থান।

শশী লজ এর ইতিহাস

মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী নিঃসন্তান ছিলেন। তাই তিনি তার এক ভাতিজাকে দত্তক নেন। ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে ৯ একর জমির উপর তিনি এক দৃষ্টিনন্দন দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেন। দত্তক পুত্র মহারাজ শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর নামে তিনি এর নাম দেন শশী লজ। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে ভবনটি ভেঙে যায়। পরে শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী ভবনটি পুনরায় নির্মাণ করেন।

ক্রিস্টাল প্যালেস নামের এই ভবন বা প্রাসাদ রংমহল নামেও পরিচিত ছিল। বাইজেন্টাইন ধাঁচের নির্মাণশৈলীতে শশী লজের নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হবার আগেই সূর্যকান্ত আচার্য মারা যান। পরে তার পুত্র শশীকান্ত আচার্য ১৯০৫ সালে এর নির্মাণ শেষ করেন। ১৯১১ সালে এর আরো কিছু সংস্কার করা হয়।

মূল ভবনের সামনে আছে সুন্দর এক বাগান। বাগানের মাঝখানে আছে শ্বেতপাথরের ফোয়ারা আর গ্রিগ দেবী ভেনাসের এক মূর্তি। এর প্রধান ফটকে রয়েছে ১৬টি গম্বুজ। প্রতি ঘরেই আছে ঝুলন্ত ঝাড়বাতি। এখানে আছে ১৮টি বিশাল কক্ষ। আরো আছে দোতলা গোসলখানা, পুকুর, মার্বেল পাথরের ঘাট।

১৯৫২ সাল থেকে শশী লজ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভবনের মূল অংশ কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় ও দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ২০১৫ সালে ৪ এপ্রিল জাদুঘর স্থাপনের জন্য শশী লজ নিয়ে নেয়।

কিভাবে যাবেন

শশী লজ যেতে হলে আসতে হবে ময়মনসিংহ জেলায়। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের দূরত্ব সড়ক পথে প্রায় ১২১ কিলোমিটার এবং রেলপথে প্রায় ১২৩ কিলোমিটার। ঢাকার সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহে আসার এসি/নন-এসি বাস সার্ভিস আছে। এনা, সৌখিন, নূর, শামীম, নিরাপদ ট্রাভেলস্, আলম এশিয়া, বিলাস, এস আলম, সিসকম, ড্রিমল্যান্ড, মামুন, শ্যামলী প্রভৃতি পরিবহণ কোম্পানী এই রুটে নিয়মিত বাস সার্ভিস পরিচালনা করে। ভাড়া ১৫০/৩৫০ টাকা। সময় নিবে ৩/৪ ঘন্টা।

ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তিস্তা এক্সপ্রেস সকাল ৭:৩০ মিনিটে, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস দুপুর ২:২০ মিনিটে, যমুনা এক্সপ্রেস বিকাল ৪:৪০ মিনিটে, ব্রম্মপুত্র সন্ধ্যা ৬:০০ টায়, হাওর এক্সপ্রেস রাত ১১:৫০ মিনিটে ছেড়ে যায়। ভাড়া ১২০/৩৬০ টাকা। সময় নিবে ৩/৪ ঘন্টা।

ময়মনসিংহ শহর থেকে ইজিবাইক বা রিক্সা নিয়ে অতি সহজেই চলে যেতে পারেন শশী লজ বা ময়মনসিংহ রাজবাড়ী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ। রিকশায় ওঠার সময় দরদাম করে ভাড়া ঠিক করে নিবে। সাধারণত ভাড়া ২০/২৫ টাকা।

কোথায় থাকবেন

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ গিয়ে শশী লজ দেখে ঐদিনই আবার ঢাকায় ফিরে আসা যায়। তবে ইচ্ছে করলে ময়মনসিংহ শহরে থাকতে পারেন। ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। তাদের মধ্যে হোটেল মুস্তাফিজ, সিলভার ক্যাসল, আমির ইন্টারনেশনাল উল্লেখযোগ্য।

4 6 ভোট
রেটিং

লেখক

আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।

Subscribe
Notify of
1 মন্তব্য
Inline Feedbacks
সব মন্তব্য দেখুন

''

1
0
আমরা আপনার অভিমত আশা করি, দয়াকরে মন্তব্য করুনx