তিস্তা ব্যারেজ (Teesta Barrage) বা তিস্তা সেচ প্রকল্প বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সব থেকে বড় সেচ প্রকল্প। এই প্রকল্প থেকে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার প্রায় ৫ লক্ষ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হয়। এর নির্মাণ কাজ ১৯৭৯ সালে শুরু হয়ে ১৯৯০ সালে শেষ হয়।
তিস্তা ব্যারেজ কোথায় অবস্থিত
তিস্তা ব্যারেজ বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানি নামক স্থানে অবস্থিত। তিস্তা নদীর উপর তৈরী করা হয়েছে এই ব্যারেজ। হাতীবান্ধা উপজেলা সদর হতে এর দুরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। লালমনিরহাট শহর থেকে এর দুরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। রংপুর শহর থেকে এর দুরত্ব প্রায় ৬১ কিলোমিটার।
কি আছে তিস্তা ব্যারেজে
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশাল এক ট্যুরিস্ট স্পট। এর আশেপাশের সৌন্দর্য খুবই চমৎকার। নদীতে বাঁধ দেয়ার ফলে এক পাশে তৈরী হয়েছে কৃত্রিম জলরাশি। সেচের জন্য বাইপাস খাল, বনায়ন আর পাথর দিয়ে বাধাঁনো পাড় সব মিলিয়ে এ যেন এক মনোরম পরিবেশ।
এখানে শীতকালে প্রচুর অতিথি পাখি আসে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর লোক আসে এখানে সময় কাটাতে। এটি লালমনিরহাট জেলার অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। বর্ষাকালে এখানে প্রচুর পানির প্রবাহ থাকে। শীতকালে এই প্রবাহ অনেক কমে যায়।
তিস্তা ব্যারেজ কিভাবে যাবেন
তিস্তা ব্যারেজ যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে আসতে হবে বাংলাদেশের নীলফামারী অথবা লালমনিরহাট জেলায়। প্রতিদিন ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর থেকে শাহ আলী, মানিক, বরকত, নাবিল, এস আর ট্রাভেল, হানিফ, রুজিনা ইত্যাদি পরিবহন কোম্পানির এসি/নন এসি বাস নীলফামারী, লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লালমনিরহাট পর্যন্ত নন এসি বাস ভাড়া ৮০০ টাকা। এসি বাস ভাড়া ১৩০০ থেকে ১৭০০ টাকা। নীলফামারী বা লালমনিরহাট থেকে মোটরসাইকেল, অটো রিক্সা ভাড়া নিয়ে চলে যাবেন তিস্তা ব্যারেজ।
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে লালমনিরহাট এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা করে। ইচ্ছে করলে ট্রেনেও যেতে পারেন লালমনিরহাট। ভ্যাট সহ ভাড়া শোভন চেয়ার ৫০৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৯৬৬, এসি বাথ ১,৭৩১ টাকা। বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েব সাইট থেকে বাসায় বসেই টিকেট কেটে নিতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
ব্যারেজের পাশেই বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজ আছে। এর নাম অবসর রেস্ট হাউজ। এই রেস্ট হাউজের ভিউ খুবই অসাধারণ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়ে এখানে রাত্রি যাপন করা যায়। তবে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। কোনো রেফারেন্স নিয়ে গেলে সব থেকে ভালো হয়। এছাড়া লালমনিরহাট জেলা শহরে এসেও থাকতে পারেন। এখানে বেশ কিছু হোটেল আছে।
কোথায় খাবেন
জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট হবার কারণে এখানে বেশ কিছু খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। যেখানে বিভিন্ন ধরণের খাবার পাওয়া যায়। এদের মধ্যে বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেঁস্তোরা, মুহাম্মাদিয়া হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট, রাহমানিয়া হোটেল এন্ড ফুড কর্ণার অন্যতম। এছাড়াও কিছু স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।