প্রথমেই বলে রাখা ভাল আমি খুব গুছিয়ে কথা বলতে বা লিখতে পারি না, তবে এক ঘনিষ্ট ভাই রাশেদ এর কথায় আমার দীঘা ভ্রমণ নিয়ে লিখছি। কয়েক বার ভারত ভ্রমনের সুযোগ এই অধম এর হয়েছে, কিন্তুু একা, এবার বউ এর পিড়াপিড়িতে তাকেও সাথে নিলাম।
আমার দীঘা ভ্রমন
আমাদের যাত্রা শুরু হল ১৩/৮/২০১৯ তারিখ রাত ১২.৪০ মি বেনাপোল এস্কপ্রেশ ট্রেন এ। ভাড়া ৫৩০ টাকা। ভোর ৯.১০ মি বেনাপোল ষ্টেশন পৌছলাম। সেখান থেকে অটো নিয়ে সরাসরি বডার। ভাড়া পড়ল মাত্র ১০ টাকা করে। এসেই যে জিনিষ টা দেখলাম তা হল আগের মত দালাল দিয়ে পাড় হবার যে সিস্টেমটা ছিল তা আর নাই। লাইনে দাড়িয়ে পার হতে হবে। তাও যে সে লাইন না, পুরা পুলসিরাতের লাইন, প্রায় দুই কিঃমি। কি আর করা লাইন এ দাড়ালাম।
এমনিতে আমার মিসেেস বিমানে না আসার কারনে একটু রাগ রাগ ছিল, সেটা শোল কলা পুন হল লাইন দেখে, এমন অবস্থা যেন পারলে আমাাকে মাইর দেয়। এদিকে ত আমি গোসলের মত ঘামছি, লাইনে দাড়িয়ে, ওর দেখে একটু মায়া হল বলল আমি লাইনে দাড়াই তুমি নাস্তা খেয়ে আস, তারপর আমি খাব।এ ই কথা বলার সাথে সাথে তাকে লাইনে দাড় করিয়ে আমি ছুটলাম ট্রেভেল টেস্ক, ও টামিনাল কর দেওয়ার জন্য।
এগুলো দিয়ে নাস্তা খেয়ে এসে দেখি লাইন প্রায় কাছে চলে এসেছে। এপারের কাজ শেষ করতে করতে ২ টা বেজে যায়। ঐ পারে আরো ৩ ঘন্টা,৫.৫৫ তে যখন হরিদাশপুর অটো ষ্টেন্ড এ দাড়াই তখন ওর পায়ে দাড়িয়ে থাকার শক্তি টুকু আর নেই। কোন মতে তাকে নিয়ে আসলাম বনগাও ষ্টেশন সি এন জি তে করে ভাড়া ৩০ রুপি করে মাত্র। আমার কাছে কিছু রুপি ছিল আগে ভারত ভ্রমনের কারনে। ষ্টেশনে একটা হোটেলে ভাল করে পেট ভরে ভাত মাছ খেলাম দুই জন মাত্র ৯৫ টাকা বিল।
তারপর ২০ টাকা করে টিকেট কেটে উঠে পড়লাম বনগাও লোকালে শিয়ালদাহ ষ্টেশনের উদ্দেশ্যে। ৬টায় ট্রেন ছাড়ল ঠিক ৭ঃ৫৬ তে আমাদের শিয়ালদাহ ষ্টেশনে। ১০০ টাকা উবার ভাড়া দিয়ে সরাসরি কলকাতায় কলিন রোড, আমরীন হোটেলে। আগের থাকার সুবাধে ৯০০ টাকা প্রতিদিন। হোটেলে উঠে না খয়েই দিলাম ঘুম। পরের দিন উঠে শহর টা ঘুরলাম, সন্ধায় নামল, কি আর করা চলে গেলাম হোটেল এ। হোটেল ম্যানেজার বলল আপনারা দীঘা ভ্রমণ এ যেতে পারেন। ভালো লাগবে।
কলকাতা থেকে দীঘা ভ্রমণ
যেই কথা সেই কাজ,২৫/৮/১৯ তারিখ দুপুরের দুটা টিকেট করে দিল নিল ৪০০ টাকা,বলল ট্রেন হাওরা থেকে ছাড়বে। একটা ক্যাব ১৫০ টাকা দিয়ে নিয়ে ঠিক টাইমে গেলাম হাওড়া। ট্রেন ঠিক ২.০০টায় ছাড়ল আর দীঘা গিয়ে পৌছল ৬ টায়।ষ্টেশন থেকে নেমে,রিস্কা নিয়ে চলে গেলাম নিউ দীঘার অমরাবতী পাক এর পিছনে, হোটেল বিকাশ এ।
এসি রুম মাত্র ৯০০ টাকা। রুমে ফ্রেশ হয়েই চলে গেলাম বীচে, হাটার রাস্তা। কি সুন্দর পরিবেশ একটার পর একটা ডেউ আছড়ে পরছে তীরে। এসব দেখতে দেখতে কখন যে ১১টা বেজে গেছে খেয়াল করি নাই। শুধু খেয়াল করেছি সমুদ্র, ও মিসেস এর আনন্দ, সে এতটা খুশি হয়েছিল যা তাকে কখনও হতে দেখি নাই। বিচের সামনে ৪০০টাকার কাকড়া আর মাছ ভাজা খেয়ে বিদাই নেই।
হোটেল এ এসে কম্বল গায় দিয়ে ঘুম। সকালে উঠে চেক আউট হয়ে একটা অটো রিজাভ নিলাম ৫০০টাকা দিয়ে ৪ঘন্টা আমাদের পুরো দীঘা ঘুরে দেখালো, অমরাবতি পাক একুরিয়াম, মন্দির ওল্ট দীঘা, এই সব। সব দেখে ওল্ড দীঘা পাকে নামিয়ে দিল, আমরা সেখানে বসে সমুদ্র দেখতে লাগলাম, বিকাল ৫ টা বাজে এবার ফিরার পালা ২৫০/ টাকা করে এসি বাসে করে রাত১১.২৬ মি কলকাতা এসে পৌছলাম।
এই হচ্ছে আমার দীঘা ট্যুর এর গল্প। এই লেখাটি আপনাদের কেমন লেগেছে কমেন্টস করে জানাবেন। কোনো পরামর্শ থাকলে তাও জানাবেন। তাহলে আমি বুঝতে পারবো আমি কেমন লেখক। যা আমাকে পরবর্তী লেখা লিখতে সাহায্য এবং উৎসাহ যোগাবে।
লেখক
আমি পেশায় একজন কর্মজীবী। কাজ করি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। ঘুরেবেড়াতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তাই যখনই সময় পাই ঘুরতে চলে যাই।