কলকাতা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এর পূর্বের নাম কলিকাতা। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এ অঞ্চলের মানুষ মূলত বাঙালি এবং বাংলা ভাষায় কথা বলে। তবে অন্যান্য ধর্ম ও ভাষাভাষীর লোকজনও এখানে রয়েছে। নানা ঘটনার সাক্ষী এই ঐতিহাসিক নগরটি ছিল ভারতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যের প্রথম রাজধানী। আসুন জেনে নেই কলকাতায় ঘুরাঘুরি কিভাবে করবেন বিস্তারিত।
কলকাতায় ঘুরাঘুরি
উনিশ-বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে কলকাতা ছিল বাংলা নবজাগরণের কেন্দ্রস্থল। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতের বিজ্ঞানচর্চা, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়গুলোতে কলকাতার পূর্বের গৌরবময় অতিহ্য কমতে থাকে। তার পরেও এখানে দেখার মতো বেশ কিছু জিনিস রয়েছে। আসুন জেনে নেই তেমন কিছু স্থাপনার কথা:
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল বা ভিক্টোরিয়া স্মৃতিসৌধ মহারানি ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এটি কলকাতা শহরে হুগলি নদীর পারে অবস্থিত। এর নকশা প্রস্তুত করেন স্যার উইলিয়াম এমারসন। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯০৬ সালে এবং উদ্বোধন করা হয় ১৯২১ সালে।
এই ভবনের উত্তর এবং দক্ষিণ দু-দিকেই রেয়েছে বিশাল দরজা। ভিতরে আরো আছে সন্দুর বাগান। প্রায় ৬৪ একর জমির উপর নির্মিত এই ভবনটির দৈর্ঘ্য ১০৩.০২ মিটার, প্রস্থ ৬৯.৪৯ মিটার। এই ভবন পুরাটাই শ্বেত পাথরের তৈরি। এটি বর্তমানে একটি জাতীয় জাদুঘর এবং কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। এটি কলকাতার সব থেকে সুন্দর স্থাপনা।
মূল ভবন এবং বাগানে প্রবেশের জন্য আলাদা আলাদা টিকেট রয়েছে। শুধু বাগানে প্রবেশ করার টিকিটের মূল্য ১০ রুপি। আর বাগান ও ভবনে প্রবেশ করার টিকিটের মূল্য ইন্ডিয়ানদের জন্য ৩০ রুপি, বিদেশি পর্যটকদের জন্য ৫০০ রুপি। সার্কভুক্ত দেশ সমূহের জন্য অবশ্য ৫০০ রুপির কম লাগে। তবে একটু চালাকি করে কোনো ইন্ডিয়ান কে দিয়ে ৩০ রুপির টিকেট কেটেই ঘুরে আসতে পারেন এই অপূর্ব সুন্দর স্থাপনাটি।
সাইন্স সিটি
সায়্যন্স সিটি কলকাতার এক অন্যতম স্থাপনা। এটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। নানা রকমের বৈজ্ঞানিক প্রয়োগ এবং প্রযুক্তির প্রদর্শন এখানে করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি চিত্তবিনোদনমূলক স্থানই নয় বরং আপনি এই জায়গা থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার উপর প্রচুর জ্ঞানার্জনও করতে পারেন।
সকল বয়সের মানুষের কাছে সায়্যন্স সিটি এক উপভোগ্য স্থান। যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে আরও জানতে চান তাদের জন্য এটি একটি সর্বোত্তম পর্যটন গন্তব্যস্থল। তাছাড়া এখানে আপনি আপনার শিশুদের বন্য পাখি এবং কৃত্রিম ডাইনোসরও দেখাতে পারেন। প্রবেশ মূল্য ছাড়াও বিভিন্ন রাইডের জন্য আলাদা আলাদা টিকেট রয়েছে। এখানে সব দেশের মানুষের জন্যই টিকেটের মূল্য সমান।
এছাড়া আরো দেখতে পারেন: কলকাতা মিউজিয়াম, হাওড়া ব্রিজ, হাওড়া রেল স্টেশন ইত্যাদি।
অন্য পর্ব গুলোও দেখে নিতে পারেন। আশাকরি ভালো লাগবে:
- পর্ব ১: সড়ক পথে কলকাতা ভ্রমণ
- পর্ব ২: কলকাতায় কোথায় থাকবেন, কি খাবেন
- পর্ব ৩: কলকাতায় কোথায় কেনাকাটা করবেন
সময়ে নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আশা করি খুব উপভোগ করেছেন। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আপনার কেমন লাগলো তা কমেন্টস করে জানালে ভালো হয়। আর ভালো লেগে থাকলে ওয়ালে শেয়ার করে বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দিন।
লেখক
আমি পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করলেও ঘুরে বেড়াতে আমি ভীষণ ভালোবাসি। আমি আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কে এই ওয়েব সাইটে নিয়মিত শেয়ার করি।